মডেল মেঘনা আলমের ল্যাপটপ ও মোবাইল তদন্তে আদালতের নির্দেশ


আদালতে হাজির মডেল মেঘনা আলম – ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের জব্দ করা পাসপোর্ট, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো উপাদান রয়েছে কি না তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি এসব ডিভাইসের মালিকানা যাচাই করে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে মেঘনা আলম হাতে জায়নামাজ নিয়ে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ান। এরপর তার আইনজীবী মহসিন রেজা ও মহিমা বাঁধন মেঘনার জব্দ করা ম্যাকবুক, ল্যাপটপ, মোবাইল ও পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হারুন অর রশিদ এ আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, "এটি একটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর মামলা। মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। ল্যাপটপ ও মোবাইল ব্যবহার করে কোন কোন ব্যবসায়ী ও কূটনীতিককে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে তা উদঘাটন জরুরি। তাই তদন্তের স্বার্থে ডিভাইস ফেরতের আবেদন নামঞ্জুর করা উচিত।"
শুনানির সময় মেঘনা আদালতকে বলেন, "আমার সঙ্গে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের পেশাগত সম্পর্ক রয়েছে। সৌদি রাষ্ট্রদূত ইশা আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিলেন। এ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত প্রমাণ আমার কাছে আছে।" এসময় বিচারক তাকে বলেন, "এটি এখন আলোচনার বিষয় নয়।"
পরে মেঘনা দাবি করেন, "বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আমার ওপর নির্ভরশীল। ছয় মহাদেশের ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থায় আমি কাজ করি। আমার ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো ফেরত দেওয়া হোক।"
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এসময় বলেন, "তিনি নারীদের ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইলের কাজ করতেন, যা মামলার এজাহারে স্পষ্ট।" এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেঘনা বলেন, "আপনি রাষ্ট্রদূতদের অসম্মান করছেন। আমি এখন পর্যন্ত নিরপরাধ।"
উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তার আটকাদেশ বাতিল হয় এবং ২৮ এপ্রিল আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরদিন তিনি কারামুক্ত হন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেঘনা আলম ও দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা সুন্দরী তরুণীদের ব্যবহার করে বিদেশি কূটনীতিক ও দেশের ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ আদায় করত।
দেওয়ান সমির ‘কাওয়াই গ্রুপ’-এর সিইও এবং ‘সানজানা ইন্টারন্যাশনাল’ ম্যানপাওয়ার কোম্পানির মালিক। এছাড়া তার ‘মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানও ছিল। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তরুণীদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে কূটনীতিক ও ব্যবসায়ীদের কাছে সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করে ব্ল্যাকমেইল ও অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটানো হতো বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।