ইসরাইলি হামলায় একদিনে প্রাণ গেল আরও ৬৭ ফিলিস্তিনির


গাজা সিটির ধ্বংসস্তূপে পরিণত। ছবি:সংগৃহীত
ইসরাইলি বাহিনীর গাজা সিটির উপর সর্বশেষ হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন আরও ৬৭ জন ফিলিস্তিনি। সামরিক অভিযানের ধারাবাহিকতায় একদিনের ব্যবধানে ইসরাইল ধ্বংস করেছে একটি ১৫তলা আবাসিক ভবন। এই ভয়াবহ হামলার কেন্দ্রবিন্দু ছিল গাজার অন্যতম প্রধান শহর গাজা সিটি।
স্থানীয় সময় শনিবার ইসরাইলি বাহিনী 'সুসি টাওয়ার' নামের একটি বহুতল ভবনে বোমা হামলা চালায়। দাবি করা হয়, ভবনটি হামাসের একটি কৌশলগত কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। ভবনটির পাশেই অবস্থিত জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএর প্রধান কার্যালয়। ভবনের বিপরীতে জাতিসংঘের অফিস থাকলেও হামলার ব্যাপারে ইসরাইলের কোনো সদুত্তর মেলেনি।
একই দিনে ইসরাইল গাজার বিভিন্ন এলাকায় একযোগে বিমান হামলা এবং স্থল অভিযান চালায়। বিশেষ করে দেইর আল বালাহ ও খান ইউনিসে চালানো হামলা ছিল ভয়াবহ। হামলার আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, যথেষ্ট সময় না দিয়েই চালানো হয় গোলাবর্ষণ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ ইতিমধ্যেই রূপ নিয়েছে এক ভয়াবহ মানবিক সংকটে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত এই সংঘাতে নিহত হয়েছে ৬৪,৪৩৫ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছে ১,৬২,৩৬৭ জনেরও বেশি। এছাড়াও, হাজার হাজার মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং জাতিসংঘ পরিস্থিতিকে মানবিক বিপর্যয় হিসেবে আখ্যা দিয়ে দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার পথ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানালেও, ইসরাইল সাফ জানিয়ে দিয়েছে, গাজা সিটিতে তাদের অভিযান চলমান থাকবে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ পোস্ট করা এক ভিডিওতে বলেন, ‘আমরা চালিয়ে যাচ্ছি’, যেখানে গাজা সিটির একটি ভবন ধসে পড়ার দৃশ্য দেখা যায়।
গাজার সাধারণ জনগণের জন্য এই অবস্থা হয়ে উঠেছে ভয়াবহ রকমের বিপর্যয়কর। যেখানে প্রতিদিন বোমার শব্দে ঘুম ভাঙে, সেখানে স্বস্তি কিংবা নিরাপত্তার আর কোনো নিশানা নেই।