জুলাই সনদ বাস্তবায়নকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন একাধিকবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করলেও এখনো কার্যকর কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যে নিজেদের খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছে কমিশনে। ফলে দাবি-দাওয়ার ভিন্নতা এবং বিরোধ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কিছুদিন আগে স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া তাদের দল নির্বাচনে অংশ নেবে না। তার এই অবস্থানকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক আরও জোরালো হয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপি সনদটিকে রাজনৈতিক সমঝোতার আওতায় রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানিয়েছেন, অনেক দল উচ্চকক্ষে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের পক্ষে হলেও বিএনপি তা চায় না। তারা নিম্নকক্ষের অনুপাতে প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। কমিশনের দ্বিতীয় দফা বৈঠকে আলোচিত ২০টি বিষয়ের মধ্যে ৭টিতেই বিএনপি আপত্তি জানিয়েছে।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “জুলাই সনদকে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি হিসেবে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এ সনদকে অবশ্যই সাংবিধানিক ভিত্তি দিতে হবে এবং আগামী নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে হতে হবে।” অন্যদিকে, বিএনপি পুরনো কাঠামো বজায় রেখে সনদটিকে রাজনৈতিক সমঝোতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এনসিপির দাবি, জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দিয়ে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে বিএনপির সদিচ্ছা থাকলে অবিলম্বে সনদ কার্যকর করা সম্ভব বলে মনে করছে দলটি। আর তা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন এনসিপি নেতারা।

তারা আরও জানান, নব্বইয়ের দশকে ৩ দলীয় রূপরেখা বাস্তবায়ন না হওয়ায় জনগণ যেমন হতাশ হয়েছিল, জুলাই সনদও যাতে সেই একই পরিণতির শিকার না হয়, সে জন্যই এটি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।