যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন মীম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
২ আগস্ট, ২০২৫ এ ৩:৫৯ পিএম
চট্টগ্রামের মীম পেলেন ৩৬ কোটি টাকার স্কলারশিপ।  ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের মীম পেলেন ৩৬ কোটি টাকার স্কলারশিপ। ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা বড়বাড়ির কন্যা মুমতাহিনা করিম মীম ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের হেনড্রিক্স কলেজ থেকে বিশ্বখ্যাত ‘হেইস মেমোরিয়াল স্কলারশিপ’ অর্জন করেছেন মীম, যা একটি পূর্ণাঙ্গ স্কলারশিপ (ফুল-রাইড)।

বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর চারজন মেধাবী শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপ পান। এ বছর তিনজন যুক্তরাষ্ট্রের এবং একমাত্র আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের মীম।

এ অসামান্য অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে সরফভাটা বড়বাড়ি থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সালাম, আরিফুল হাসান চৌধুরী মুরাদ, মঞ্জুর হাসান চৌধুরী, খালেদ হোসেন চৌধুরী রাসেল, নাজিম উদ্দীন চৌধুরী সুজা, করিম চৌধুরী, মো. রাহাত, মো. শিফু, সোহেল রানা প্রমুখ।

শুধু হেনড্রিক্স কলেজই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের আরও ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পেয়েছেন মীম। সব মিলিয়ে তার স্কলারশিপের আর্থিক মূল্য প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। তবে মীম হেনড্রিক্স কলেজেই কম্পিউটার সায়েন্স (ডুয়েল-ইঞ্জিনিয়ারিং) প্রোগ্রামে স্নাতক সম্পন্ন করবেন বলে জানিয়েছেন। আগামী ৫ আগস্ট তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রওনা দিবেন।

মীমের বাবা ব্যবসায়ী আব্দুল করিম চৌধুরী এবং মা ইয়াসমিন আক্তার। তিনি চট্টগ্রাম শহরের অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং কাপাসগোলা মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। ছোটবেলায় একবার বাবা-মার সঙ্গে বিদেশ ভ্রমণের পর থেকেই উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন গড়ে ওঠে তার মধ্যে।

নিজেকে গড়ে তুলতে মীম করেছেন কঠোর পরিশ্রম। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় নিজেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন এবং নবম শ্রেণিতে প্রতিষ্ঠা করেন ৬৫ সদস্যের একটি প্রোগ্রামিং ক্লাব। এই ক্লাবেই শুরু তার নেতৃত্বের যাত্রা ও প্রযুক্তির প্রতি ভালোবাসা।

জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেছেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় এবং জিতেছেন একাধিক পুরস্কার। বিশেষভাবে, করোনা মহামারির সময় ঘরে বসেই গড়ে তোলেন একটি মিনি রোবটিক্স ল্যাব এবং তৈরি করেন ‘কিবো’ নামের একটি রোবট, যা খাবার পরিবেশন করতে পারে।

প্রযুক্তি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম ও সাক্ষাৎকারে। নিজের সংগ্রামের কথা জানিয়ে মীম বলেন, “সহশিক্ষা কার্যক্রম আমার পরিচয়ের একটি বড় অংশ। ছোটবেলা থেকেই বিতর্ক, চিত্রাঙ্কন, গান, প্রোগ্রামিং ও বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করেছি। প্রতিটি পুরস্কারই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। বিদেশে পড়ার স্বপ্ন ছিল বলেই ধাপে ধাপে প্রস্তুতি নিয়েছি এবং মা-বাবা ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় সফল হয়েছি।


আজকের প্রথা/মেহেদি-হাসান