গাইবান্ধায় তিস্তার ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ


গাইবান্ধার শ্রীপুর ইউনিয়নে নদীভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে, নদীতে বিলীন হচ্ছে জমি ও ঘরবাড়ি। । ছবি সংগৃহীত
গাইবান্ধায় তিস্তার তীব্র ভাঙনে নদীতীরবর্তী বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে। জানা গেছে, যেসব জমি ইতিমধ্যে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে, সেগুলোর বেশির ভাগেই পাট, কচু ও আমন ধানের বীজতলা ছিল। ভাঙনের তীব্রতা এতই বেশি যে কিছু কিছু জায়গায় দিনরাত নদী গিলে নিচ্ছে মানুষের বাসস্থান, রাস্তা ও চাষাবাদের জমি।
সম্প্রতি জেলার গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ ও ফুলছড়ি উপজেলার নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে ভাঙনের প্রকোপ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বর্ষার পানির তোড়ে ঢেউয়ের সঙ্গে সঙ্গে নদীভাঙনের শব্দও বেড়েছে। নদীতীরের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি খুলে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন, কেউ আবার গাছ কেটে বা পাকা কবরস্থান বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঘিরে রাখার চেষ্টা করছেন। ফসলের মধ্যে পাট কেটে নেওয়া হচ্ছে পরিপক্ব হওয়ার আগেই।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বাবুর বাজার গ্রামের আব্দুল জলিল (৬৫) জানান, তাঁর ৩৬ শতক জমির মধ্যে ২২ শতাংশই ভাঙনের কবলে পড়ে নদীতে হারিয়ে গেছে। প্রতিবেশী ইয়াসউদ্দিন জানান, তাঁর সাত শতাংশ কচুর জমি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। নদীর হঠাৎ ভাঙনে পরিবারগুলো আশ্রয় নিচ্ছে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে।
একই উপজেলার মমিনুর ইসলাম বলেন, তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন, কিন্তু ভাঙনের ফলে ফসল পরিপক্ব হওয়ার আগেই জমি নদীতে পড়ে গেছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, দ্রুত কোনো ব্যবস্থা না নিলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কয়েকটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লার চর এলাকার ইয়াকুব প্রামাণিক বলেন, 'নদী ভাঙতে ভাঙতে আমরা শেষ। খরায়, বর্ষায়, এমনকি পানি বাড়লেও বা কমলেও নদী ভাঙে।’ একই এলাকার বদিউজ্জামান বলেন, ‘নদীভাঙনের ফলে মানচিত্র থেকেই ইউনিয়ন মুছে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।’
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জানান, ভাঙনের স্থানগুলো পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে।