অনাবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পঞ্চগড়ের আমন চাষ


পঞ্চগড়ে খরায় ধান চাষে সংকট, কৃষকের দুর্ভোগ চরমে। ছবি : সংগৃহীত
অনাবৃষ্টির কারণে এবছর পঞ্চগড়ে আমন চাষাবাদ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অন্য বছরগুলোতে এ সময়ে ধান রোপণ শেষ হলেও এবার ৬০ হাজার হেক্টরের বেশি জমি এখনও পতিত পড়ে আছে। সূর্যের প্রখর তাপে বীজতলা শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাজার হাজার কৃষক।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে ভরা বর্ষাকালেও বৃষ্টির দেখা নেই। চলমান তীব্র খরতাপে ফেটে গেছে ফসলি জমি। প্রাকৃতিক বৈরিতায় আমন চাষে প্রান্তিক কৃষকেরা পড়েছেন গভীর সমস্যায়। কেউ কেউ সেচের মাধ্যমে চারা রোপণ করলেও তাতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ।
চাষিরা জানান, এক সময় আষাঢ়-শ্রাবণের বৃষ্টির পানিতে স্বাভাবিকভাবেই আমন ধান চাষ করা যেতো। কিন্তু গত বছর জুলাই মাসে যেখানে ৭৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল, এবার সেখানে মাত্র ১৯৬ মিলিমিটার। বৃষ্টির এই ঘাটতি আমন আবাদে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
কৃষকেরা বলছেন, “যাদের মোটর দিয়ে সেচ দেওয়ার সুযোগ আছে তারা কোনোভাবে রক্ষা পাচ্ছেন। কিন্তু যাদের সেই সামর্থ্য নেই, তাদের জমির ধান শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।” সেচ দিতে গিয়ে প্রতি বিঘায় প্রায় দেড়গুণ খরচ বেড়ে গেছে বলে জানান তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবার ১ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত হয়েছে মাত্র ৪০ হাজার হেক্টরে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, “চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যেন তারা দুই-একটি সেচ দিয়ে চাষাবাদ শেষ করে ফেলেন। এতে করে অতিরিক্ত খরচ না করে কিছুটা হলেও লাভবান হওয়া সম্ভব।”
ধানের চারায় সবুজ হয়ে যেত যে মাঠ, এখন সেখানে দেখা যাচ্ছে গরু-ছাগল চরে বেড়াচ্ছে। আশা একটাই—আকাশ থেকে অবারিত বর্ষণ নামুক, ফিরুক কৃষকের মুখে হাসি।