বাংলাদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও একই দিনে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে—সিইসির এই ঘোষণার পর বিষয়টি দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স একাধিক প্রতিবেদনে তফসিল ঘোষণার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, দেশীয় পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করেছে। সংস্থাটি উল্লেখ করে, গত বছরের রক্তক্ষয়ী ছাত্র আন্দোলনের পর এটি হবে দেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচন।

রয়টার্সের আরেক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো, তাদের অবস্থান এবং ভোটের প্রধান ইস্যুসমূহ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের জরিপ উদ্ধৃত করে তারা জানায়, বিএনপি সবচেয়ে বেশি আসন পেতে পারে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী দ্বিতীয় অবস্থানে থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। অপরদিকে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির অবস্থান তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে।

ফ্রান্সভিত্তিক বার্তা সংস্থা এএফপি প্রথমে ‘অ্যালার্ট’ জারি করে তফসিলের খবর জানায় এবং পরবর্তীতে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তারা জানায়, ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক সংস্কারের সনদ নিয়ে একই দিনে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। সংস্থাটি আরও উল্লেখ করে, গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা এপি জানায়, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ঘটার ১৮ মাস পর বাংলাদেশ আবার জাতীয় নির্বাচনের মুখোমুখি হচ্ছে। এই নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি। তবে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে না পারায় সিদ্ধান্তটি প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি।

কাতারভিত্তিক আল জাজিরা জানায়, এক বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর বাংলাদেশ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন করতে যাচ্ছে। তাদের প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, এই তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা নতুন এক মাইলফলকের সূচনা করল।

ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টুডে ও আনন্দবাজার তফসিল ঘোষণাকে প্রধান খবর হিসেবে প্রকাশ করেছে। এছাড়া ইউএস নিউজ, আনাদোলু এজেন্সি এবং মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের আরও কয়েকটি সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ নির্বাচনের আপডেটকে গুরুত্ব দিয়েছে।