মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যায় নতুন তথ্য দিল পুলিশ


মোহাম্মদপুরের বাসায় মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় ব্রিফিং করছে ডিএমপি। ছবি: সংগৃহীত
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানান, গৃহকর্মী আয়েশা মূলত চুরির পরিকল্পনা নিয়েই ওই বাসায় কাজ শুরু করেছিলেন। ঘটনার দিন বাসার মালামাল চুরি করার সময় গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজ বিষয়টি ধরে ফেলেন। এতে আয়েশা ভয় পেয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে তাকে হত্যা করেন।
তিনি বলেন, লায়লা আফরোজকে হত্যার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার নবম শ্রেণির মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়া চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে ড্রয়িংরুমে আসেন। মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে তিনি হতবাক হয়ে গেলে আয়েশা তাকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর দ্রুত স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় সে।
৮ ডিসেম্বর সকালে শাহজাহান রোডের একটি ১৪ তলা ভবনের সপ্তম তলার সেই বাসা থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর প্রযুক্তিগত পর্যবেক্ষণ ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১০ ডিসেম্বর বরিশালের নলচিটি এলাকায় দাদা-শ্বশুরের বাড়ি থেকে আয়েশাকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানে সে আত্মগোপনে ছিল বলে জানায় পুলিশ।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে, তার উদ্দেশ্য ছিল শুধু স্বর্ণের গয়না ও মূল্যবান মালামাল চুরি করে পালিয়ে যাওয়া। কিন্তু লায়লা আফরোজ তাকে হাতেনাতে ধরে ফেললে ধরা পড়ার ভয়ে প্রথমে গৃহকর্ত্রীকে, পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে মেয়েকেও হত্যা করে।
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মেয়েটির শরীরে চারটি আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশ বলছে, ঘটনাটি ছিল পরিকল্পনাহীন হলেও চুরির সময় ধরা পড়ে যাওয়ার আতঙ্ক থেকেই দুইজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে গৃহকর্মী আয়েশা।
পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডটি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত ও চুরির উদ্দেশ্য ভেস্তে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ঘটেছে। মামলাটির তদন্ত চলছে এবং আয়েশাকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। শিগগিরই এ ঘটনায় পূর্ণ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।










