আজ বেগম রোকেয়া দিবস

জাতীয় ডেস্ক
জাতীয় ডেস্ক
৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ এ ৫:৪৭ এএম
বেগম রোকেয়া। ছবি: সংগৃহীত

বেগম রোকেয়া। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দে আজ পালিত হচ্ছে বেগম রোকেয়া দিবস। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ও মৃত্যু দিবস উপলক্ষে রাজধানী থেকে পায়রাবন্দ পর্যন্ত নানা আয়োজনে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে এই মহীয়সী নারীর স্মৃতিকে।

পায়রাবন্দের আঁতুড়ঘর ও স্মৃতিকেন্দ্র ঘিরে বহু বছর ধরে উন্নয়নকাজের দাবি থাকলেও অধিকাংশ অবকাঠামো এখনো অচল অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভবন নির্মাণ হলেও সেগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত হয়নি। ফলে স্মৃতিকেন্দ্রটি আজও কার্যক্রমহীন থেকে পরিত্যক্ত বাড়ির মতো অবস্থায় রয়েছে।

এদিকে নারী শিক্ষার প্রসার ও নারীমুক্তি আন্দোলনে বেগম রোকেয়ার অবদান স্মরণে আজ সকাল পৌনে ৯টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সরকারি পর্যায়ে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে প্রদান করা হবে বেগম রোকেয়া পদক–২০২৫। এবার চারজন বিশিষ্ট নারী এই পদকে ভূষিত হচ্ছেন—ড. রুভানা রাকিব (নারী শিক্ষা), কল্পনা আক্তার (শ্রম অধিকার), ড. নাবিলা ইদ্রিস (মানবাধিকার) এবং রিতু পর্ণা চাকমা (ক্রীড়া)।

পায়রাবন্দ এলাকায় নির্মিত বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রটি ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২৪ বছরেও চালু হয়নি। স্থানীয়রা বলছেন, অবকাঠামো নির্মাণের পর দীর্ঘ সময় কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কেন্দ্রটি ‘ভুতুড়ে বাড়ি’তে পরিণত হয়েছে। স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম দুলাল বলেন, “শুধু ভবন থাকলেই হবে না, কার্যক্রম চালু করতে হবে। জন্মভূমির এই কেন্দ্র চালু না হওয়া লজ্জাজনক।”

এদিকে বেগম রোকেয়ার পরিবারের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, তাদের পৈতৃক সম্পত্তির অংশ হিসেবে থাকা অন্তত ৫১ একর ৪৬ শতক জমি বেদখল হয়ে গেছে। তার বৈমাত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে রনজিনা সাবের জানান, আঁতুড়ঘরের ৩০ শতাংশ জমি তাদের হলেও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দখলে নিয়েছে। তিনি বলেন, “সরকার যদি অধিগ্রহণ করতে চায়, করুক। না হলে জমি ফেরত দেওয়া হোক।”

বাংলা সাহিত্য, নারী জাগরণ ও সমাজ সংস্কারে বেগম রোকেয়ার অবদান বাঙালি সমাজে আজও অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। নারীর অধিকার, শিক্ষা ও স্বাধীনতার যে আলো তিনি ছড়িয়ে গেছেন, সেই আদর্শের পথ ধরেই আজও এগিয়ে চলছে নারী সমাজ। তবে তার স্মৃতির প্রতি যথাযথ সম্মান জানাতে জন্মভূমির স্মৃতিকেন্দ্র দ্রুত চালুর দাবি স্থানীয়দের মুখে আরও জোরালো হয়েছে।