ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ২৯ বছর পর আদালতের নির্দেশে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতের দিকে শাহরিয়া চৌধুরী ইমন বা সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন, যেখানে অভিনেতার স্ত্রী সামিরা হকসহ মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সামিরা হক ছাড়াও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডন প্রভৃতি আছেন। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি হিসেবে নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে আদালত সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন এবং তার মা নীলা চৌধুরীর রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করেন।

শুনানিতে বলা হয়েছে, সালমান শাহর মৃত্যুদিন তার লাশের বুকের বাম পাশে কালো দাগ এবং শরীর থেকে মল ও বীর্য বের হয়েছিল। ঘরে সিরিঞ্জ ও স্ত্রীর ব্যাগে ক্লোরোফরম জাতীয় ওষুধ পাওয়া গিয়েছিল। পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ থাকলেও সিবিআই তদন্তে বড়সড় গড়মিল দেখা গেছে।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে অভিনেতা মারা যান। সাবেক স্ত্রী সামিরা হক তা আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও পরিবারের অভিযোগ, সালমান শাহকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আদালত সেই অভিযোগকে খতিয়ে দেখে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন।

সালমান শাহের প্রকৃত নাম ছিল শাহরিয়া চৌধুরী ইমন। তিনি কমর উদ্দিন চৌধুরী ও নীলা চৌধুরীর সন্তান। ছোটপর্দার নাটক ‘আকাশ ছোঁয়া’, ‘দোয়েল’, ‘সব পাখি ঘরে ফেরে’, ‘সৈকতে সারস’, ‘নয়ন’ ও ‘স্বপ্নের পৃথিবী’-তে অভিনয় করে নিজের অভিনয় প্রতিভা প্রমাণ করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের সিনেমা ক্যারিয়ারে তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন।

১৯৯৩ সালে সালমান শাহ অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ মুক্তি পায়। এরপর তিনি আরও ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘দেন মোহর’, ‘তোমাকে চাই’, ‘বিক্ষোভ’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘জীবন সংসার’, ‘মহামিলন’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ও ‘এই ঘর এই সংসার’।