ইসলামি ব্যাংক নিয়ে নতুন পদক্ষেপ নিল বাংলাদেশ ব্যাংক


ছবি : সংগৃহীত
ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা আনতে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খসড়া অনুযায়ী, প্রয়োজন হলে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) নিয়োগ বাতিল করে অস্থায়ীভাবে প্রশাসক বসাতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশেষ করে ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে রেজ্যুলেশন বিষয়ে পরামর্শ দিতে আলাদা শরিয়াহ বোর্ড গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র জানায়, অকার্যকর ব্যাংক অবসায়ন বা একীভূতকরণের লক্ষ্যে প্রণীত এ নীতিমালার খসড়া ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি চূড়ান্ত করে সার্কুলার আকারে জারি করা হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারলে কিংবা দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় অক্ষম হলে পুনর্গঠন, একীভূতকরণ বা অবসায়নের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খসড়ায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো ব্যাংক আর্থিকভাবে সংকটে পড়লে প্রথমে দুই মাস সময় দিয়ে উন্নতির সুযোগ দেওয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকটি পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হলে প্রশাসক নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে শেয়ারহোল্ডার পরিবর্তন, নতুন শেয়ার ইস্যু, সম্পদ ও দায় হস্তান্তর কিংবা শেয়ার বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নীতিমালাটি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে ব্যাংকগুলো নিজস্ব আর্থিক সূচক মূল্যায়ন করে আগেভাগেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে পারে। খেলাপি ঋণের হার, মূলধন পর্যাপ্ততা, প্রভিশন ঘাটতি, বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ, অতিরিক্ত তারল্য ইত্যাদি সূচকের অবনতি হলে ব্যাংকগুলো বুঝতে পারবে তারা ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে।
এছাড়া, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপর ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। এর মধ্যে নতুন শাখা খোলা বন্ধ, বৈদেশিক মুদ্রার লাইসেন্স না দেওয়া, ঋণ বিতরণে নিয়ন্ত্রণ, এমনকি আমানত সংগ্রহে নিষেধাজ্ঞা পর্যন্ত জারি হতে পারে। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাতকে স্বচ্ছ ও স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর অবস্থান নিচ্ছে।