ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার সাবেক ১৭ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে হাজির করা হলো

আজকের প্রথা প্রতিবেদন
আজকের প্রথা প্রতিবেদন
৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ এ ৫:০৬ এএম
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তায় হাজির করা হয় সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তায় হাজির করা হয় সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের। ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনা সরকারের আমলের সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৭ জনকে হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ হাজির করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুরসহ বিভিন্ন কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়, যেখানে মামলার অগ্রগতি নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সকালে প্রায় পৌনে ১০টার দিকে প্রিজনভ্যানযোগে আসামিদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একে একে গাড়ি থেকে নামিয়ে তাদের হাজতখানায় নিয়ে যান। আদালতপাড়ায় এ সময় নিরাপত্তা ছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ের, এবং ট্রাইব্যুনালে প্রবেশের আগে উপস্থিত সবাইকে তল্লাশির মুখোমুখি হতে হয়।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত বিচারিক প্যানেলে মামলার সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে শুনানি নির্ধারিত রয়েছে। আসামিদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, সচিব এবং এমপি।

প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, হাসানুল হক ইনু এবং জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে পৃথক ফরমাল চার্জ দেওয়া হয়েছে। ইনুর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। একই সঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানকালে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ও গণহত্যার অভিযোগে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ পলকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল-১। জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।

এ ছাড়া কারফিউ জারি করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে আনা চার্জও আদালত আমলে নিয়েছে। এসব মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে ১৫ অক্টোবর পৃথক মামলায় সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্তের অগ্রগতি জানতে নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল-১। প্রসিকিউশন সময় বাড়ানোর আবেদন করলে আদালত নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করে। বছরের শুরু থেকে বিভিন্ন ধাপে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের হাজির করা হয়, এবং সব মিলিয়ে এক সময়ের হেভিওয়েট নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক চার্জ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

এদিন ট্রাইব্যুনাল চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার থাকলেও শুনানি ঘিরে আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী ও স্বজনদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মামলার অগ্রগতি ও পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণের মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের এ জটিল মামলাগুলোতে নতুন ধাপ যোগ হবে বলে আদালত সূত্র মনে করছে।