পটুয়াখালী শহরে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা


পটুয়াখালী শহরের রাস্তায় জমে থাকা পানিতে দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের উপকূলীয় ১৩টি জেলার মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা একটি অঞ্চল হলো পটুয়াখালী। ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধি, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়া এবং অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের হার বেড়ে যাওয়ার কারণে এই শহরের পরিবেশ ও জনজীবন এখন চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায় (৭ জুলাই রাত ৯টা থেকে ৮ জুলাই রাত ৯টা পর্যন্ত) ২৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা শহরে নতুন এক ভয়াবহ জলাবদ্ধতার চিত্র ফুটিয়ে তোলে। এর ফলে নিউমার্কেট, মহিলা কলেজ, জুবিলী স্কুল এলাকা, বিভিন্ন রাস্তা, দোকানপাট এবং অসংখ্য বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়।
এই জলাবদ্ধতার মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে শহরের অকার্যকর ও অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাল ও জলাশয়ের অব্যাহত দখল, অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা পাকা স্থাপনা এবং সমন্বয়হীন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে শহরের প্রায় প্রতিটি অংশে পানি জমে থাকে, যার কারণে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ছে, পাশাপাশি দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালকদের আয়-রোজগারে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কেবল প্রকল্প গ্রহণ করলেই চলবে না—প্রয়োজন টেকসই ও সমন্বিত পরিকল্পনা, যাতে জনসম্পৃক্ততা ও প্রশাসনিক দায়িত্বশীলতা থাকে। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য খাল ও জলাশয় পুনঃখনন, দখলমুক্তকরণ, পরিকল্পিতভাবে স্লুইস গেট ও কালভার্ট নির্মাণ, ড্রেন সংস্কার এবং জলবায়ু অভিযোজনভিত্তিক উন্নয়ন নীতিমালা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে পটুয়াখালীর এই সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান আনতে।