মনোনয়ন বাণিজ্যে হাজার কোটি টাকার অভিযোগে আলোচনায় নানক


ছবি: সংগৃহীত
২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়ায় জাহাঙ্গীর কবির নানককে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা শুরু হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনার কারণে নানকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। সম্ভবত এই প্রভাবেই শেষ পর্যন্ত নানককে নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তবে মনোনয়ন না দিলেও নানক এরপর দ্রুত পদোন্নতি পান; তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হন।
নানক ২০০৯ সালে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন এবং সেই সময়ও দুর্নীতির অভিযোগে বিতর্কিত ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি এমপি থাকাকালে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তিনি মন্ত্রী বা এমপি না হলেও স্থানীয় রাজনৈতিক কার্যক্রমে তার প্রভাব অব্যাহত থাকে। প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর নানক কমিটি ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেন শুরু করেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ভিতরে মনোনয়ন বাণিজ্য শুরু হয়। যারা চেয়ারম্যান বা মেয়র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন, তারা নানকের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা দিয়ে মনোনয়ন নেন। কমিটি গঠনের মাধ্যমে দলের মধ্যে লুটপাটের সুযোগ তৈরি হয়। এ সময় বিভিন্ন নতুন নেতা, যারা দলীয় কার্যক্রমে আগে যুক্ত ছিলেন না, তারা নানকের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হন।
নানকের আর্থিক কর্মকাণ্ড কেবল দেশে সীমাবদ্ধ ছিল না। তার অনেক অবৈধ অর্থ বিদেশে বিনিয়োগ করা হয়। ভারতেও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করা হয় এবং মাসে মাসে লভ্যাংশ হিসেবে টাকা পাওয়া চলছিল। নানকের বড় ছেলে ও মেয়ের ঘটনা সম্পর্কিত পারিবারিক পরিবর্তনের পর তার মেয়ের তত্ত্বাবধানে বিদেশে বিনিয়োগ অব্যাহত থাকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নানকের সম্পদের বড় অংশ তার বিশ্বস্ত অনুসারী ও ক্যাডারদের নামে রাখা হয়েছে। এ কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে ধরতে এবং সম্পদের মালিকানা প্রমাণ করতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, গত ১৫ বছরে নানক প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডির অলিগলিতে তার কিছু সম্পদ রয়েছে।