নীলফামারী উত্তরা ইপিজেড সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত, শতাধিক আহত


নির্দেশিত কারখানা বন্ধ ঘোষণায় নীলফামারী ইপিজেডে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত
নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন এবং অন্তত শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে পুরো এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ইপিজেডের এভারগ্রিন কারখানার সামনে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। নিহত শ্রমিকের নাম হাবিব, যিনি ইকু প্লাস্টিক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি কাজিরহাট এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এভারগ্রিন কোম্পানির শ্রমিকরা কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। সোমবার কোম্পানির পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিলে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকালে ইপিজেডের প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় তারা অন্যান্য শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামে।
শ্রমিকদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির সময় পুলিশ ও সেনা সদস্যরা এক নারী শ্রমিককে মারধর করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে হাবিব নিহত হন। এ ঘটনায় আরও অনেক শ্রমিক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
শ্রমিক মমিনুর রহমান বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছিলাম। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হঠাৎ আমাদের ওপর গুলি চালায়।” আরেক শ্রমিক মো. রায়হান জানান, “আমাদের আন্দোলন ছিল সম্পূর্ণ ন্যায্য দাবির পক্ষে। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এতে জড়িত ছিল না।” শ্রমিক লিপি আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আজ একজন সহকর্মী মারা গেলেন, এর জবাব কে দেবে?”
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীরুল ইসলাম জানান, তাদের হাসপাতালে ছয়জনকে আনা হয়। এর মধ্যে হাবিবকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
৫৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এসএম বদরুদ্দোজা জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ইপিজেডের সব কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধি, কারখানা কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক চলছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি।