সাবেক মন্ত্রীর অর্থপাচারের রুট উন্মোচন করল সিআইডি


সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ছবি:সংগৃহীত
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তদন্তে জানা গেছে, তিনি প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচার করে সেখানে মোট ২২৬টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। পাশাপাশি স্থানীয় বিভিন্ন ব্যবসায়ও বিনিয়োগ করেন। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি এ তথ্য প্রকাশ করে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুবাইয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তদন্ত শেষে সাইফুজ্জামান চৌধুরী (৫৬) ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানসহ (৪৬) অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মানিলন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে প্রতিমন্ত্রী ও পরবর্তীতে মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন সাইফুজ্জামান। তিনি ইউনাইটেড ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তিনবারের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
তদন্তে উঠে এসেছে, ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দুবাইয়ের আল বারশা, থানিয়া, জাদ্দাফ, বুর্জ খলিফা, জাবাল আলি, ওয়ার্ল্ড আইল্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় মোট ২২৬টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন তিনি। এসব ফ্ল্যাটের দাম ধরা হয়েছে প্রায় ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৬৮ দিরহাম। তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের নামে আল বারশা সাউথ এলাকায় আরও দুটি সম্পত্তি পাওয়া গেছে, যার মূল্য প্রায় ২২ লাখ ৫০ হাজার দিরহাম।
এ ছাড়া দুবাই ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংকের একাধিক হিসাবে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেনের তথ্য মিলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেকর্ড অনুযায়ী, এসব লেনদেনের পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩১১ কোটি টাকার সমান। অথচ বিদেশে কোম্পানি নিবন্ধন, বিনিয়োগ বা সম্পত্তি অর্জনের জন্য সরকারের কোনো অনুমতি তিনি নেননি।
সিআইডি জানিয়েছে, অনুমতি ছাড়াই বিদেশে সম্পত্তি ক্রয়, কোম্পানি নিবন্ধন ও ব্যাংক হিসাবে অর্থ জমা করার মাধ্যমে তিনি প্রায় ১২০০ কোটি টাকা পাচার করেছেন। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) অনুযায়ী গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।