নারীর অবদান দৃশ্যমানে আনার আহ্বান সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার


নারীর অবৈতনিক কাজের স্বীকৃতি বিষয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ছবি:সংগৃহীত
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নারীর অদৃশ্য অবদানসমূহ দৃশ্যমানে রূপ দিতে হবে। তিনি মনে করেন, নারীর অবৈতনিক গৃহস্থলী ও যত্নমূলক কাজ অর্থনীতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলে, কিন্তু এর যথাযথ স্বীকৃতি এখনো দেওয়া হয়নি।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং ইউএন উইমেন বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে প্রণীত ‘আনপেইড হাউজহোল্ড প্রোডাকশন স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শারমীন মুরশিদ।
তিনি বলেন, মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার অবদান রয়েছে। তবে বিবিএস-এর ২০২১ সালের জরিপ অনুযায়ী, নারীরা পুরুষদের তুলনায় গড়ে ৭ দশমিক ৩ গুণ বেশি সময় অবৈতনিক কাজে ব্যয় করেন। অথচ এই বিশাল পরিমাণ শ্রমের অর্থনৈতিক মূল্যায়ন কিংবা সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়া হয় না।
উপদেষ্টা মনে করেন, নারীর অবৈতনিক কাজকে জাতীয় স্বীকৃতি দিতে হলে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় কাঠামো গঠন জরুরি। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সামাজিক নীতিতে যত্নমূলক কাজকে অন্তর্ভুক্ত করতে রাজস্ব, শ্রম এবং সামাজিক সুরক্ষা নীতিতে লিঙ্গভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তী জাতীয় উন্নয়ন কৌশল প্রণয়নে নারীর অধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে মর্যাদাপূর্ণ কেয়ার-গিভিং চাকরি সৃষ্টি, জেন্ডার সমতাভিত্তিক কর্মনীতি প্রণয়ন এবং কেয়ার অবকাঠামোয় বিনিয়োগ বাড়ানো সময়ের দাবি। শ্রম অধিকার ও কেয়ার সম্পর্কিত বিধি-বিধানে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডকে সম্মান জানিয়ে এগিয়ে গেলে সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।
শারমীন মুরশিদ বলেন, “সমাজ পরিবর্তিত হচ্ছে। গবেষণা এবং সঠিক স্বীকৃতির মাধ্যমে আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করতে পারি, তবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে সক্ষম হব।