টাকা পে কার্ড প্রতারণা ঠেকাতে জনগণকে সতর্ক করল বাংলাদেশ ব্যাংক


সাইবার নিরাপত্তা হুমকিতে-টার্গেটে সাধারণ মানুষ। ছবি : সংগৃহীত
অনলাইনে প্রতারণার নতুন এক ফাঁদ ছড়ানো হয়েছে ‘টাকা পে কার্ড’ নামের একটি ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। ‘takapaycard.com’ নামে এই সাইটটি প্রথম দেখায় আধুনিক কোনো পেমেন্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মনে হলেও, এটি সম্পূর্ণভাবে প্রতারণামূলক এবং বিভ্রান্তিকর।
ওয়েবসাইটটিতে সরকার অনুমোদিত প্রকল্পের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন আর্থিক সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করা হচ্ছে। এতে অনেকেই ব্যক্তিগত স্পর্শকাতর তথ্য—জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ফোন নম্বর, এমনকি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তথ্য—দিয়ে দিচ্ছেন, যার মাধ্যমে প্রতারক চক্র অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়ছে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ফাঁদ থেকে বাঁচতে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি। বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, “মানুষ এখন অনলাইননির্ভর। প্রতারকেরা সেটাকেই সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে। আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের অর্থ ফেরতের ব্যবস্থাও থাকা উচিত।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘টাকা পে কার্ড’ নামে কোনো বৈধ কার্ড বা প্রকল্প সরকারের নেই। এ ওয়েবসাইটের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বেআইনি। ব্যাংকিং খাতের কেউ এটি অনুমোদন করেনি এবং এটি কোনো স্বীকৃত আর্থিক পরিষেবা নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, “ওয়েবসাইটটির বিষয়ে আমাদের নজরে এসেছে। প্রতারণা বন্ধে আমরা ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।”
বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বিটিআরসি-কে চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে সাইটটি বন্ধ করার জন্য। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে জনসচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়াও, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর জন্য বিষয়টি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (BFIU)-এ পাঠানো হবে।
তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ ‘টাকা পে কার্ড’ সাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন এবং ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এজেন্ট হতে আবেদন করেছেন। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে, প্রতারণার মাত্রা কতটা বিস্তৃত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ফাঁদ ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে প্রতারণার শিকার হবেন আরও অনেকে।








