শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৭ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

অর্থনীতি ডেস্ক
অর্থনীতি ডেস্ক
১৩ অক্টোবর, ২০২৫ এ ৫:৩০ এএম
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৭ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেডকে (সিএনএস লিমিটেড) একক উৎস থেকে কাজ প্রদান করে সরকারের প্রায় ৩০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকার ক্ষতি সাধনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাত সাবেক মন্ত্রীসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (১২ অক্টোবর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক তানজিল আহমেদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির হাসান।

মামলায় আসামি করা হয়েছে— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান (অর্থ ও পরিকল্পনা), সাবেক সচিব এম এ এন ছিদ্দিক (সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়), সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক জলিল, সাবেক উপসচিব মোহাম্মদ শফিকুল করিম, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল, ইবনে আলম হাসান, মো. আফতাব হোসেন খান, মো. আব্দুস সালাম, সিএনএস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও পরিচালক ইকরাম ইকবাল।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের কাজ একক উৎসভিত্তিক চুক্তিতে সিএনএস লিমিটেডকে দেওয়া হয়। পূর্বের টেন্ডার বাতিল করে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই পাঁচ বছরের জন্য এই প্রতিষ্ঠানকে সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা হয় মোট আদায়কৃত টোলের ১৭.৭৫ শতাংশ হারে। এর ফলে সিএনএস লিমিটেড মোট ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার বিল গ্রহণ করে, যা একই মেয়াদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বহুগুণ বেশি ছিল।

তুলনামূলকভাবে দেখা যায়, ২০১০-১৫ সালে MBEL-ATT নামের যৌথ উদ্যোগে টোল আদায়ের কাজ হয়েছিল মাত্র ১৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকায়। পরবর্তীতে ২০২২-২৫ মেয়াদে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে ৬৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকায় একই কাজ দেওয়া হয়। বিশ্লেষণে দেখা যায়, সিএনএস লিমিটেডকে দেওয়া কাজের কারণে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা ও সিএনএস লিমিটেডের পরিচালকরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও আত্মসাতের মাধ্যমে নিজেদের বা অন্যদের আর্থিকভাবে লাভবান করেছেন। মামলাটি দায়ের করা হয়েছে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায়।