টিকটকের নতুন ফিচারে সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন


কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য টিকটকের নতুন ইনবক্স ও চ্যাট ফিচার। ছবি : সংগৃহীত
টিকটক ব্যবহার করছে আপনার সন্তান? আপনি চিন্তিত, সে কী দেখছে, কী করছে বা কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে? এ ধরনের উদ্বেগ কমাতে এবার টিকটক এনেছে বেশ কিছু নতুন ফিচার। এসব ফিচার অভিভাবকদের সন্তানদের অ্যাকাউন্ট কার্যক্রম আরও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্যও যুক্ত হয়েছে নতুন নিরাপত্তামূলক এবং যোগাযোগ-সহায়ক ফিচার।
টিকটকের ‘ফ্যামিলি পেয়ারিং’ ফিচারে আগেও অভিভাবকরা সন্তানের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নিজেদের অ্যাকাউন্ট যুক্ত করার সুযোগ পেতেন। এবার সেই ফিচারে যুক্ত হয়েছে আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা। এখন অভিভাবকরা সন্তানদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু অ্যাকাউন্ট সম্পূর্ণভাবে ব্লক করে দিতে পারবেন। এতে সেই অ্যাকাউন্টগুলো সন্তানের ভিডিও দেখতে বা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে না। সন্তান যদি কোনো ভিডিও বা ছবি পাবলিক করে আপলোড করে, তবে সঙ্গে সঙ্গে অভিভাবকের ফোনে একটি নোটিফিকেশন চলে যাবে। এতে অভিভাবক সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এমনকি ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী টিনএজারদের প্রাইভেসি সেটিং সম্পর্কেও জানা যাবে—যেমন কনটেন্ট ডাউনলোড চালু আছে কি না অথবা তাদের ফলোয়ার লিস্ট পাবলিক কি না।
কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য এসেছে ‘ক্রিয়েটর কেয়ার মুড’। এই মুড চালু করলে আপত্তিকর বা অশালীন মন্তব্যগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফিল্টার হয়ে যাবে। পূর্বে রিপোর্ট করা বা মুছে ফেলা মন্তব্যকারীদের ভবিষ্যতের মন্তব্যও ব্লক হয়ে যাবে। লাইভ চলাকালে কিছু নির্দিষ্ট শব্দ আগেভাগেই ব্লক করে রাখা যাবে এবং কেউ সেই শব্দ লিখলে তাকে অস্থায়ীভাবে মিউট করার সুবিধাও থাকবে।
নির্মাতাদের জন্য আরও থাকছে ‘ক্রিয়েটর ইনবক্স’, যেখানে ‘আনরিড’ এবং ‘স্টার চিহ্নিত’ মেসেজগুলো আলাদাভাবে দেখা যাবে। নতুন ‘কাস্টম রিপ্লাই’ ফিচার থাকছে, যার মাধ্যমে দ্রুত ও প্রাসঙ্গিক উত্তর দেওয়া যাবে। ‘ক্রিয়েটর চ্যাট রুম’ নামের একটি নতুন সুবিধাও থাকছে, যেখানে ফলোয়ারদের সঙ্গে সরাসরি চ্যাট করা যাবে, তবে এজন্য নির্মাতার বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে এবং তার ফলোয়ার সংখ্যা হতে হবে কমপক্ষে ১০ হাজার।
‘কনটেন্ট চেক লাইট’ নামে একটি নতুন ফিচারের মাধ্যমে পোস্ট করার আগে দেখা যাবে সেই কনটেন্টটি ‘For You’ ফিডের জন্য উপযুক্ত কি না। ভবিষ্যতে এই ফিচার আরও উন্নত হবে এবং কমিউনিটি গাইডলাইনের সঙ্গে মিলিয়ে কনটেন্ট যাচাই করার সুবিধাও দেবে।
মানসিক স্বাস্থ্য এবং ডিজিটাল ভারসাম্য বজায় রাখতেও টিকটক উদ্যোগ নিয়েছে ‘ওয়েলবিয়িং মিশন’ নামে। এতে থাকবে ছোট ছোট কুইজ, ফ্ল্যাশ কার্ড, স্ক্রিন টাইম রিপোর্ট, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং মন শান্ত করার জন্য বিশেষ অডিও। এই মিশন শেষ করলে ব্যবহারকারীরা ডিজিটাল ব্যাজও অর্জন করতে পারবেন।
টিকটক জানিয়েছে, তারা এমন একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে চায়, যেখানে কিশোর-কিশোরীদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে এবং কনটেন্ট নির্মাতারাও একটি নিরাপদ ও ইতিবাচক অভিজ্ঞতা পাবেন।