যেভাবে ইসরাফিল (আ.) শিঙ্গা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন


ছবি : সংগৃহীত
পৃথিবীর জীবন ও মানুষের সব কর্মকাণ্ডের অবসান ঘটবে কিয়ামতের মাধ্যমে। মহান আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ঘোষণা দিয়েছেন—
﴿هَلۡ يَنظُرُونَ إِلَّا ٱلسَّاعَةَ أَن تَأۡتِيَهُم بَغۡتَةٗ فَقَدۡ جَآءَ أَشۡرَاطُهَاۚ فَأَنَّىٰ لَهُمۡ إِذَا جَآءَتۡهُمۡ ذِكۡرَىٰهُمۡ ١٨﴾ (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত: ১৮)
“তারা কেবল এ অপেক্ষায় আছে যে, কিয়ামত হঠাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। অথচ কিয়ামতের লক্ষণ তো ইতিমধ্যে এসে গেছে। সুতরাং কিয়ামত উপস্থিত হলে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কিভাবে?”
কিয়ামতের ভয়াবহতা কোরআনের বিভিন্ন সূরায় বর্ণিত হয়েছে। সূরা আল-কারিআহতে আল্লাহ বলেন, সেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের মতো। তারা দিক-বিদিক ছুটোছুটি করবে, যেন ভীত-সন্ত্রস্ত পতঙ্গ ধ্বংসের আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। পাহাড়সমূহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আকাশে ভেসে বেড়াবে রঙিন পশমের মতো।
সেদিন মানুষের পরিণতি নির্ভর করবে তার আমলের ওপর। যার আমলের পাল্লা ভারী হবে, সে পাবে সন্তোষজনক জীবন। আর যার পাল্লা হালকা হবে, তাকে উল্টোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
কিয়ামতের সূচনা হবে হজরত ইসরাফিল (আ.)-এর শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়ার মাধ্যমে। কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন—
﴿وَنُفِخَ فِي ٱلصُّورِ فَصَعِقَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُۖ ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخۡرَىٰ فَإِذَا هُمۡ قِيَامٞ يَنظُرُونَ ٦٨ وَأَشۡرَقَتِ ٱلۡأَرۡضُ بِنُورِ رَبِّهَا وَوُضِعَ ٱلۡكِتَٰبُ وَجِاْيٓءَ بِٱلنَّبِيِّۧنَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَقُضِيَ بَيۡنَهُم بِٱلۡحَقِّ وَهُمۡ لَا يُظۡلَمُونَ ٦٩﴾ (সুরা আয-যুমার, আয়াত: ৬৮-৬৯)
“আর শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। ফলে আসমান ও জমিনে যারাই থাকবে, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন সে ছাড়া সবাই অচেতন হয়ে পড়বে। তারপর আবার ফুঁ দেওয়া হবে, তখন তারা দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকবে। জমিন তার প্রভুর আলোতে আলোকিত হবে, আমলনামা হাজির করা হবে, নবীগণ ও সাক্ষীগণকে আনা হবে, এবং ন্যায়বিচারের মাধ্যমে ফয়সালা করা হবে। তাদের প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না।”
আরেক স্থানে আল্লাহ তায়ালা বলেন—
﴿يَوۡمَ يُنفَخُ فِي ٱلصُّورِ وَنَحۡشُرُ ٱلۡمُجۡرِمِينَ يَوۡمَئِذٖ زُرۡقٗا ١٠٢﴾ (সুরা ত্বহা, আয়াত: ১০২)
“যেদিন শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, সেদিন আমি অপরাধীদেরকে নীলবর্ণ, ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় একত্র করব।”
রাসূলুল্লাহ (সা.) হাদিসে বলেছেন—
“ইসরাফিল (আ.) শিঙ্গা মুখে ভরে দাঁড়িয়ে আছেন, মাথা নত করে প্রভুর আদেশের অপেক্ষায় আছেন। কখন তাকে নির্দেশ দেওয়া হবে আর তিনি ফুঁ দেবেন।” (তিরমিজি)
প্রথম ফুঁতে সমগ্র সৃষ্টিজীবের মৃত্যু ঘটবে, আর দ্বিতীয় ফুঁতে সবাই পুনরুজ্জীবিত হয়ে হাশরের ময়দানে একত্রিত হবে।