ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে পুরুষের রোজগারে কার হক বেশি?

ধর্ম ডেষ্ক
ধর্ম ডেষ্ক
২৭ অক্টোবর, ২০২৫ এ ৫:১৬ এএম
শায়খ আহমাদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

শায়খ আহমাদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

একজন পুরুষের রোজগারের ক্ষেত্রে প্রথম এবং সর্বাধিক কর্তব্য মা-বাবার ওপর নয়, বরং তার স্ত্রী এবং সন্তানদের প্রতি। ইসলামী শরিয়তে স্ত্রী হলো স্বামীর সম্পূর্ণ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিঃ তার খাদ্য, পোশাক ও অন্যান্য ভরণ-পোষণের দায় স্বামীর ওপর ফরজ। মা-বাবার জন্য অর্থ ব্যয় অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে যদি তাদের নিজের আয় বা সম্পদ থাকে যা দিয়ে তারা চলতে পারে, তাহলে তা ফরজ নয়; এই ক্ষেত্রে খরচ নফল হিসেবে বিবেচিত হয়।

মা-বাবার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা সর্বোচ্চ হলেও, অর্থব্যয় সংক্রান্ত কর্তব্য স্ত্রীর প্রতি বেশি। মা-বাবার জন্য অর্থ খরচ করা তখনই ফরজ যখন তাদের নিজস্ব আয় নেই বা তাদের প্রাপ্য রুজি থেকে চলা সম্ভব নয়। স্ত্রী থাকলে স্বামীকে তার ভরণ-পোষণের সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করতে হবে, আর স্ত্রীর জন্য এই দায়িত্ব বৈবাহিক সম্পর্ক থাকা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

শিশুদের ক্ষেত্রে স্বামীর রুজির থেকে তাদের পূর্ণ ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করা অবশ্যক, কারণ সন্তানরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের রোজগার বা আয় করতে পারে না। মা-বাবার জন্যও যতটা সম্ভব খরচ করা উচিত, তবে এটি নফল ব্যয় হিসেবে গণ্য হবে যদি তাদের নিজস্ব সম্পদ থাকে। ইসলামের শিক্ষায় পরিবার ও স্বজনদের প্রতি দায়িত্ব নির্দিষ্টভাবে বণ্টিত, এবং স্বামীর রুজি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে তার স্ত্রীর ও সন্তানদের জন্য ব্যয় করা হয়।

মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো এবং তাদের জন্য ব্যয় করা নফল হিসেবে থাকে, কিন্তু স্ত্রীর জন্য অর্থ খরচ করা স্বামীর ফরজ কর্তব্য। এই দায়িত্ব মেনে চললে পরিবারে আর্থিক ভারসাম্য বজায় থাকে এবং ইসলামী শরীয়তের নির্দেশ অনুযায়ী সঠিকভাবে রুজির ব্যবহার নিশ্চিত হয়।

সমাজে এই শিক্ষা বাস্তবায়ন করলে পারিবারিক দায়িত্ববোধ এবং নৈতিক দিক থেকে সঠিক আচরণ নিশ্চিত হয়। তাই একজন পুরুষের রোজগারের সবচেয়ে বড় অংশ প্রথমে স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণ-পোষণে ব্যয় করা উচিত, তারপর প্রয়োজনে মা-বাবার জন্য ব্যয় করা হবে।