প্যারাসিটামল নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করল ডব্লিউএইচও


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
গর্ভাবস্থায় প্যারাসিটামল সেবন করলে শিশুর অটিজম হতে পারে—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন মন্তব্য স্পষ্টভাবে নাকচ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বুধবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, জ্বর ও ব্যথার এই প্রচলিত ওষুধের সঙ্গে অটিজমের কোনো সম্পর্কের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
ডব্লিউএইচওর বিবৃতিতে বলা হয়, গত এক দশকে আন্তর্জাতিকভাবে একাধিক বৃহৎ গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। এসব গবেষণায় প্যারাসিটামল সেবন এবং অটিজমের মধ্যে কোনো যোগসূত্র মেলেনি। ওষুধটির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে বৈজ্ঞানিক তথ্যও অটিজমের সঙ্গে কোনো সম্পর্ককে সমর্থন করে না।
বিশ্বজুড়ে প্রচলিত এই ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে অ্যাসিটামিনোফেন নামে পরিচিত এবং মার্কিন বাজারে টাইলেনল ব্র্যান্ড নামে বিক্রি হয়। ডব্লিউএইচও মনে করিয়ে দিয়েছে, গর্ভাবস্থায় যেকোনো ওষুধ গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই একমাত্র সঠিক উপায়। কেবল চিকিৎসকই রোগীর শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহারের নির্দেশ দিতে পারেন।
এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শিশুকালের টিকা এবং গর্ভবতী নারীদের প্যারাসিটামল সেবনের সঙ্গে অটিজমের সম্পর্ক থাকার দাবি করেন। এমনকি তিনি টাইলেনল সেবন না করার পরামর্শও দেন। তাঁর বক্তব্যের পর আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো তীব্র নিন্দা জানায়।
‘কোয়ালিশন অব অটিজম সায়েন্টিস্টস’ এক বিবৃতিতে জানায়, প্যারাসিটামল অটিজমের কারণ—এমন দাবি প্রমাণিত নয়। তাছাড়া অটিজমের চিকিৎসায় ট্রাম্প প্রস্তাবিত ভিটামিন বি৯ (লিউকোভোরিন) ব্যবহারের কার্যকারিতারও কোনো প্রমাণ নেই। এ ধরনের মন্তব্য কেবল আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করে।
ওষুধটির প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কেনভিউ ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে জানায়, স্বাধীন ও নির্ভরযোগ্য গবেষণা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে, অ্যাসিটামিনোফেন বা প্যারাসিটামল সেবনে অটিজম হয় না। প্রতিষ্ঠানটি গর্ভবতী নারী ও অভিভাবকদের উদ্বেগ সৃষ্টিকারী এ ধরনের দাবির কঠোর সমালোচনা করেছে। একই সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসও (এনএইচএস) বলেছে, ট্রাম্পের দাবিকে সমর্থন করার মতো কোনো নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।