নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ, বিক্ষোভে নিহত ১৯

আন্তর্জাতিক ডেষ্ক
আন্তর্জাতিক ডেষ্ক
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ এ ২:২৩ এএম
নেপালে তরুণদের আন্দোলন। ছবি:সংগৃহীত

নেপালে তরুণদের আন্দোলন। ছবি:সংগৃহীত

নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের পর তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নেমেছে। রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৯ জন নিহত এবং তিন শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সরকার বিক্ষোভ দমন করতে বানেশ্বর, সিংহদরবার, নারায়ণহিতি ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ব্যবহার করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি জরুরি মন্ত্রিসভা বৈঠক আহ্বান করেন এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার নেপাল সরকার ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধ ঘোষণা করে। এর মধ্যে ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, লিংকডইন ও রেডিট রয়েছে। সরকার জানায়, এসব প্ল্যাটফর্ম তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে রেজিস্ট্রেশন না করায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২৮ আগস্ট থেকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও কোনো আবেদন না আসায় এগুলো বন্ধ করা হয়।

এই সিদ্ধান্তের পেছনে ছিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা। আদালত বলেছিল, প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে নেপালে প্রতিনিধি নিয়োগ, অভিযোগ নিষ্পত্তি কর্মকর্তা এবং কমপ্লায়েন্স অফিসার রাখতে হবে। তবে টিকটক, ভাইবার, উইটক, নিমবাজ ও পপো লাইভ এখনও চালু রয়েছে।

কাঠমান্ডু পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, নেপালে অন্তত ১ কোটি ৩৫ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং ৩৬ লাখ ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী আছেন। অনেকেই ব্যবসা ও জীবিকার জন্য এসব প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভরশীল। ফলে হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা জনজীবনে বড় প্রভাব ফেলেছে।

তবে বিক্ষোভকারীদের মতে, কেবল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ হওয়াই তাদের আন্দোলনের কারণ নয়। এর গভীরে রয়েছে দুর্নীতি ও সরকারের কর্তৃত্ববাদী মনোভাব। এক শিক্ষার্থী ইউজান রাজভান্ডারি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ হওয়া আমাদের রাস্তায় নামিয়েছে, কিন্তু মূল সমস্যা দুর্নীতি। নেপালে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে।” আরেক শিক্ষার্থী ইক্ষামা তুমরোক জানান, “আমরা সরকারের কর্তৃত্ববাদী মানসিকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। পরিবর্তন চাই। আমাদের প্রজন্মেই এই অবসান ঘটাতে হবে।”

এদিকে সরকার জানিয়েছে, তারা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং তা সুরক্ষিত করতে কাজ করবে। এর আগে টেলিগ্রাম অ্যাপ অনলাইন প্রতারণার অভিযোগে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। গত বছর নিষিদ্ধ টিকটক সরকারের শর্ত পূরণের পর আবারও চালুর অনুমতি পায়।