টানা চার দিনের দরপতনে ইতিহাস গড়ল ভারতীয় রুপি


ডলারের বিপরীতে রেকর্ড দরপতনের প্রভাবে চাপে পড়েছে ভারতীয় রুপি ও শেয়ারবাজার। ছবি সংগৃহীত
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান প্রায় ৬ শতাংশ কমেছে। এর ফলে ২০২৪ সালে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল পারফরম্যান্সের মুদ্রা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে রুপি। সোমবার যেখানে প্রতি ডলারের মূল্য ছিল ৯০ দশমিক ৭৮ রুপি, মঙ্গলবার তা আরও কমে নতুন রেকর্ড গড়ে।
গালফ নিউজের খবরে বলা হয়, এই দরপতনে ভারতের মুদ্রাবাজারে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাব্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা রুপির ওপর বড় চাপ তৈরি করছে। ভারত এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক নীতির কারণে ভারতের রপ্তানি খাত আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছে। এর প্রভাব সরাসরি বিনিয়োগ প্রবাহ ও মুদ্রা বাজারে পড়ছে।
এদিকে ডিসেম্বর মাসেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে প্রায় ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার তুলে নিয়েছেন। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে তারা রুপির পরিবর্তে ডলারের দিকে ঝুঁকছেন, যার ফলে স্থানীয় বাজারে রুপির চাহিদা কমে যাচ্ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) বর্তমানে মুদ্রার মান ধরে রাখার চেয়ে সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে রুপির দরপতন ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খুব বেশি আক্রমণাত্মক হস্তক্ষেপ করছে না।
অর্থনীতিবিদদের ধারণা, চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষ নাগাদ প্রতি ডলারের বিপরীতে রুপির মান ৯১ ছুঁতে পারে। রুপির দীর্ঘস্থায়ী দুর্বলতা ভারতের শেয়ারবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। নভেম্বরের রেকর্ড উচ্চতা থেকে নিফটি-৫০ সূচক ইতোমধ্যে প্রায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে, যা ৫ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে আরও দুর্বল করছে।









