গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ এ ৯:৪২ এএম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ গণহত্যা ঠেকাতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শুধু গাজা শহরেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৩ জন। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন ত্রাণ সংগ্রহকারীও রয়েছেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইসরায়েলি বাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রবেশ করে একাধিক পরিবারকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। গাজার সাবরেন আল মাবহু জানান, তার ভাইকে রুমেই হত্যা করা হয়েছে এবং একইসঙ্গে স্ত্রী ও সন্তানকেও হত্যা করা হয়। তিনি বলেন, “আমাদের পরিবার থেকে কেউ বাঁচতে পারেনি।”

বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর আশ্রয়কেন্দ্রে টার্গেট করে গোলাবর্ষণের অভিযোগও পাওয়া গেছে। শেখ রাদওয়ানের এক বাসিন্দা বলেন, স্কুলগুলোতেও হামলা চালানো হচ্ছে যেখানে বাস্তুচ্যুতরা আশ্রয় নিয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যারা এসব দেখছে অথচ কিছু করছে না, আমরা তাদেরও ক্ষমা করব না।”

গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন সপ্তাহে কেবল গাজা সিটিতেই ১০০টিরও বেশি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ইসরায়েল। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে প্রায় ১ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ এ পরিস্থিতিকে “প্রলয়ংকরী” বলে অভিহিত করেছেন।

অপরদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, অবরোধ ও খাদ্য সংকটের কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয়জন, যার মধ্যে এক শিশু রয়েছে, অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছে। এ পর্যন্ত অনাহারে মৃত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩৬৭, যার মধ্যে ১৩১ শিশু।

জাতিসংঘের আশঙ্কা, ইসরায়েলের এই অভিযান প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। শুধু আগস্ট মাসের শেষার্ধে জোরপূর্বক ৮২ হাজার মানুষকে গৃহহীন হতে হয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজারকে উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।