এক ধাক্কায় নিজের বেতন দ্বিগুণ করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক ডেষ্ক
আন্তর্জাতিক ডেষ্ক
৪ জুলাই, ২০২৫ এ ৮:০৩ এএম
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে এক নির্বাহী আদেশ (ডিক্রি) জারি করে নিজেই নিজের মাসিক বেতন দ্বিগুণ করেছেন। অথচ তিনি বর্তমানে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিবেচিত।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দিনা বলুয়ার্তে এখন থেকে প্রতি মাসে ৩৫ হাজার ৫০০ সোল (প্রায় ১০ হাজার মার্কিন ডলার) বেতন পাবেন, যা আগের বেতনের তুলনায় দ্বিগুণ। তার এই সিদ্ধান্ত সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

“অমানবিক” বলছেন অনেকে, তীব্র ক্ষোভ সামাজিক মাধ্যমে
দেশটির ন্যূনতম মাসিক মজুরি মাত্র ১ হাজার ২৫ সোল (প্রায় ২৮৮ ডলার), যার চেয়ে প্রেসিডেন্টের বেতন প্রায় ৩৫ গুণ বেশি। এই অসামঞ্জস্যে ক্ষুব্ধ হয়ে অনেকেই সিদ্ধান্তটিকে “অমানবিক” এবং “মানুষের দুর্দশার প্রতি সরকারের বধিরতা” বলে আখ্যা দিয়েছেন।

একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী লিখেছেন, “যখন মানুষ ঠিকমতো খাবার জোটাতে পারছে না, তখন নিজের বেতন বাড়ানো অপরাধ।”
আরেকজন লিখেছেন, “মানুষ ক্ষুব্ধ, কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বিকার।”

পেরুর আরেকুইপা শহরে প্রেসিডেন্টের গাড়িবহরে পাথর ও ডিম ছোড়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে জনগণের ক্ষোভ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

সরকারের ব্যাখ্যা জনগণ মেনে নেয়নি
পেরুর অর্থমন্ত্রী রাউল পেরেজ রেয়েস জানিয়েছেন, “আঞ্চলিক অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে এই বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে।” তবে এই ব্যাখ্যা সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে পারেনি।

বর্তমানে প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের জনসমর্থন মাত্র ২ শতাংশ, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন বলে উল্লেখ করেছে বিবিসি।

নির্বাচিত নন, শাসনকাল জুড়েই বিতর্ক
দিনা বলুয়ার্তে সরাসরি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলো অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারিত হলে, ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি দায়িত্ব নেন।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাকে ঘিরে একাধিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দামি উপহার গোপন রাখা, নাকের অস্ত্রোপচারের সময় দেশে কাউকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব না দিয়ে বিদেশে চলে যাওয়া, এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার মতো বিষয়গুলো জনরোষের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে। যদিও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আঞ্চলিক তুলনায় কম ছিল আগের বেতন
সরকারের দাবি, বলুয়ার্তের পূর্ববর্তী বেতন দক্ষিণ আমেরিকার ১২টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ছিল। কেবল বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের বেতন তার চেয়ে কম।

 

আজকের প্রথা/এআর