গাজায় মানবিক বিপর্যয়

ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়াল

আন্তর্জাতিক ডেষ্ক
আন্তর্জাতিক ডেষ্ক
১৯ আগস্ট, ২০২৫ এ ৩:৩৩ এএম
গাজা : ছবি : সংগৃহীত

গাজা : ছবি : সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৩৪৪ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত মোট ৬২ হাজার ৪ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

১৮ আগস্ট সোমবার, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে জানায়, সর্বশেষ হতাহতের এই পরিসংখ্যান তাদের দৈনিক আপডেটের ভিত্তিতে প্রকাশ করা হয়েছে। আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৩০ জনে পৌঁছেছে। মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দুইজন শিশু। অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত দুর্ভিক্ষজনিত কারণে ২৬৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু রয়েছে ১১২ জন।

উদ্ধারকাজে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে বলেও জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ আটকে আছেন, কিংবা রাস্তায় আহত অবস্থায় পড়ে আছেন। কিন্তু ইসরাইলি বিমান হামলা এবং জরুরি সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকারী দল অনেক ক্ষেত্রেই দুর্গতদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।

এদিকে, খাদ্য ও মানবিক সাহায্য নিতে গিয়েও ইসরাইলি বাহিনীর হামলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় এমন হামলায় ২৭ জন নিহত ও ২৮১ জন আহত হয়েছেন। ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত শুধু মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে প্রাণ গেছে ১ হাজার ৯৬৫ জনের, আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৭০১ জন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলি ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করেছিল। সেই ঘটনার পরপরই ইসরাইল গাজায় টানা অভিযান শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশের চাপে ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে মার্চ মাসেই ইসরাইল নতুন করে অভিযান শুরু করে, যাতে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার ৪৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৪৪ হাজার ১৮৯ জন আহত হয়েছেন।

এছাড়া, গত নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলাও চলমান রয়েছে।