কৃষকের মুখে হাসি

আনারসের রাজধানী মধুপুরে পেঁপের রঙিন বিপ্লব

আরশেদ আলম (ভ্রাম্যমাণ) প্রতিনিধি
আরশেদ আলম (ভ্রাম্যমাণ) প্রতিনিধি
২৫ আগস্ট, ২০২৫ এ ৩:২০ এএম
মধুপুরে আবাদ হচ্ছে টপ লেডি পেঁপের ছবি : আজকের প্রথা

মধুপুরে আবাদ হচ্ছে টপ লেডি পেঁপের ছবি : আজকের প্রথা

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা বহুদিন ধরে আনারস চাষের জন্য পরিচিত। তবে এবার উপজেলায় পেঁপে চাষে এক নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।

চলতি মৌসুমে উপজেলার ১,০৫৬ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও উন্নত জাতের চারার কারণে ফলন ভালো হয়েছে। ফলে কৃষকদের মুখে আনন্দের ঝিলিক দেখা দিয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগের মৌসুমে আনারসের দরপতনের কারণে কৃষকরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এ বছর অনেকেই আনারসের পাশাপাশি পেঁপে চাষে ঝুঁকেছেন। কেউ কেউ আবার জমি লিজ নিয়ে কেবলমাত্র পেঁপের বাগান গড়ে তুলেছেন। উন্নত জাতের চারা রোপণ করায় প্রতিটি গাছ থেকে চার থেকে পাঁচ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে।

মধুপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকেরা জানান, আনারসের পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে তারা পেঁপে, আদা, হলুদ, কলা ও লেবু চাষ করছেন। এতে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার হচ্ছে এবং আয়ও বাড়ছে।

অরণখোলা ইউনিয়নের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি ২৯ বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল পেঁপে চাষ করেছেন। মৌসুমের শুরুতেই তিনি প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকার কাঁচা পেঁপে বিক্রি করেছেন। আগস্টের পর নতুন ফলনের মাধ্যমে আরও ভালো আয় হবে বলে তিনি আশা করছেন।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা বলেন, “মধুপুরের মাটি ও আবহাওয়া সব ধরনের ফসলের জন্য উপযোগী। আনারসের পাশাপাশি এখানে পেঁপে, কলা, পেয়ারা, ড্রাগনসহ নানা অর্থকরী ফসল হচ্ছে। ঝুঁকি কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। বর্তমানে উন্নত জাতের টপ লেডি, রেড লেডি ও সুইট লেডি জাতের পেঁপে চাষ হচ্ছে। চলতি মৌসুমে অন্তত ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার পেঁপে বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।”

মধুপুরের কৃষকেরা জানান, পেঁপে চাষের এই সাফল্য তাদের নতুন উদ্দীপনা দিয়েছে। তারা আশা করছেন, আগামী মৌসুমেও এই ধারা বজায় থাকবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।