রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা

বিএনপি বলছে পিআর পদ্ধতি নিয়ে ভোট বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র চলছে

রাজনীতি ডেস্ক
রাজনীতি ডেস্ক
২৬ আগস্ট, ২০২৫ এ ৩:৩৭ এএম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক অঙ্গনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতি নিয়ে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। ফেব্রুয়ারিতে সম্ভাব্য নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এই ইস্যুতে প্রধান দুই রাজনৈতিক ধারার মধ্যে তীব্র মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। বিএনপি ও তার সহযোগী দলগুলো প্রকাশ্যে পিআর পদ্ধতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ কিছু দল এ পদ্ধতিকে সমর্থন জানিয়েছে। এ অবস্থায় হঠাৎ পিআর নিয়ে তৎপরতাকে বিএনপি নির্বাচনের সময় বিলম্বিত করার একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করছে। দলটির নেতারা বলছেন, সভা-সেমিনার ও গণআন্দোলনের মাধ্যমে এ বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরা হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পিআর পদ্ধতির দাবি ক্ষমতার ভাগাভাগি ও রাজনৈতিক দর-কষাকষির অংশ হিসেবেই সামনে আনা হয়েছে। বিএনপি নীতিনির্ধারকদের অভিযোগ, নির্বাচনে তাদের সম্ভাব্য বিজয় ঠেকাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহল নানা কৌশল অবলম্বন করছে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের প্রচলিত নির্বাচনী সংস্কৃতিতে এই পদ্ধতি একেবারেই অচেনা। জনগণ ব্যক্তিনির্ভর জনপ্রতিনিধিকেই ভোট দিতে অভ্যস্ত। ফলে প্রার্থীর নাম ছাড়াই কেবল দলভিত্তিক ভোট হলে গণতান্ত্রিক জবাবদিহি কমে যাবে।

বিএনপি নেতারা আরও দাবি করেন, নতুন এই পদ্ধতি বাস্তবায়নে অন্তত এক দশক সময় লাগবে। কিন্তু এখনই আলোচনায় আনার উদ্দেশ্য কেবল নির্বাচনের তারিখ পেছানো। তারা বলেন, পিআর ব্যবস্থায় কোনো দলই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে না, বরং ছোট ছোট দল অপ্রত্যাশিত সুবিধা পাবে। এতে সংসদ ঝুলন্ত অবস্থায় থেকে যাবে, যা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুতর সংকট তৈরি করবে।

অন্যদিকে সাম্প্রতিক একটি জরিপে দেখা গেছে, ৭১ শতাংশ উত্তরদাতা পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে বিএনপি এই জরিপের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দলটির নেতারা বলছেন, অল্পসংখ্যক ভোটারের মতামতের ভিত্তিতে গোটা জাতির অভিমত নির্ধারণ করা যায় না।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এম এম নাসির উদ্দীন অবশ্য স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বর্তমান সংবিধানে পিআর পদ্ধতির কোনো বিধান নেই। আইন পরিবর্তন ছাড়া এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি থাকলেও নির্বাচনের পূর্বে এই বিতর্কের সমাধান হওয়া প্রয়োজন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান আসবে এবং নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে।