জনগণের দায়িত্ব পেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বে বিএনপি: তারেক রহমান


তারেক রহমানের নির্বাচনকালীন অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি । ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দুর্নীতি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রাকে সংকটে ফেলেছে। তিনি মনে করেন, সরকারি সেবা, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য ও ব্যবসার প্রতিটি ধাপেই দুর্নীতির ভোগান্তি নাগরিকদের জীবনকে দমবন্ধ করে তুলছে। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, চাকরি খুঁজতে যাওয়া একজন গ্র্যাজুয়েট থেকে শুরু করে একটি সাধারণ কৃষক পর্যন্ত—সবারই দুর্নীতির বোঝা বহন করতে হচ্ছে।
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি, মানসম্মত শিক্ষার অভাব, রাস্তা-ঘাটের নিরাপত্তাহীনতা—সবকিছুর মূলে একই সমস্যা, আর সেটি হলো দুর্নীতি। তাঁর দাবি, এসব কারণেই বাংলাদেশ উন্নতির পথে বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই নতুন কিছু নয়; বরং এটি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের প্রেক্ষাপটে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন বিএনপির বিভিন্ন শাসনামলে নেওয়া সংস্কার উদ্যোগের কথা, যা দেশে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় সফল হয়েছিল।
তারেক রহমান উল্লেখ করেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, পরিষ্কার সরকারি সেবা এবং অর্থনীতিকে উদারীকরণের মাধ্যমে দুর্নীতি কমানোর ভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন। এরপর বেগম খালেদা জিয়ার সময় সরকারি কর্মকাণ্ডকে আধুনিকায়ন, কঠোর অডিট ব্যবস্থা, স্বচ্ছ ক্রয় নীতিমালা এবং আর্থিক শৃঙ্খলা জোরদার করা হয়।
তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ ছিল ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন। এটি ছিল একটি স্বাধীন কমিশন, যাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সরকার রাখেনি। বিশ্বব্যাংক, এডিবি–সহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এটিকে বাংলাদেশের জবাবদিহির ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অগ্রগতি বলে উল্লেখ করেছিল।
বিএনপি আমলে দুর্নীতি কমার প্রমাণ হিসেবে তিনি টিআইবি’র জরিপ ফলাফলের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ২০০২–২০০৫ সালের মধ্যে বাস্তব উন্নতির চিত্র দেখা গেছে। তাঁর দাবি, নাগরিকরাও তখন বলেছিলেন যে দুর্নীতি কমেছে—এটি কোনো কল্পকাহিনি নয়।
আগামী দিনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই আরও শক্তিশালী করতে বিএনপির পরিকল্পনাও তুলে ধরেন তারেক রহমান। এর মধ্যে রয়েছে—প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, উন্মুক্ত দরপত্র ব্যবস্থা, শক্তিশালী তথ্য অধিকার আইন, বিচারব্যবস্থার সংস্কার, ই-গভর্ন্যান্স সম্প্রসারণ, হুইসলব্লোয়ার সুরক্ষা এবং আধুনিক আর্থিক নজরদারি ব্যবস্থা। তারেক রহমানের মতে, এসব কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে দেশে ৩০–৬০ শতাংশ দুর্নীতি কমানো সম্ভব।
তিনি বলেন, বহু অব্যবস্থাপনার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়। সৎ নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা এবং জনগণের সমর্থন একত্রে থাকলে বাংলাদেশ আবারও সঠিক পথে ফিরতে পারবে।
পোস্টে তিনি টিআইবি প্রকাশিত বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০০১–২০০৬ মেয়াদের দুর্নীতির সূচকের একটি চিত্রও যুক্ত করেন, যা তার বক্তব্যের প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপিত।









