বিএনপির আসন ভাগাভাগি নিয়ে জটিলতা

রাজনীতি ডেস্ক
রাজনীতি ডেস্ক
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ এ ৩:৫৬ এএম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভিড় এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। প্রার্থী বাছাইয়ে পড়েছে নাজেহাল অবস্থা। তার ওপর যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের জন্য ছাড় দিতে হবে আসন, সঙ্গে খুঁজতে হচ্ছে নতুন শরিকও। সব মিলিয়ে আসন ভাগাভাগির হিসাব এখন বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে।

আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এর আগে চলতি মাসের মধ্যেই অন্তত ২০০ আসনে একক প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, “আমরা এ মাসের মধ্যেই কমবেশি ২০০ নির্বাচনী এলাকায় একক প্রার্থীকে গ্রিন সিগন্যাল দেব। এখন আমরা সেই প্রক্রিয়ার শেষ দিকে।”

বিএনপি ও শরিক দলগুলোর সূত্রে জানা গেছে, আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। শরিক দলগুলো তাদের প্রস্তাবিত প্রার্থীর তালিকা জমা দিয়েছে এবং সে অনুযায়ী আসন ছাড়ের দাবি তুলেছে। এসব তালিকা বিশ্লেষণ করে বিএনপি সর্বোচ্চ ৩০টির মতো আসন ছাড় দেওয়ার বিষয়ে ভাবছে। ইতোমধ্যে অন্তত ১৫ জন শরিক দলের প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।

এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র সঙ্গে বিএনপির জোটবদ্ধ হওয়ার আলোচনা চলছে। সূত্রমতে, এই জোট গঠন হলে এনসিপিকে ৫ থেকে ৭টি আসন ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি, যদিও এনসিপির দাবি আরও বেশি।

তবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এনসিপির সঙ্গে রাজনৈতিক যোগাযোগ আছে, কিন্তু জোট গঠন হবে কি না, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।” এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “আমরা এখনো সম্ভাব্যতা যাচাইপর্বে আছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার গঠনই আমাদের লক্ষ্য, তাই সমঝোতা বা জোট হতে পারে।”

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, যুগপৎ আন্দোলনে শরিকদের ভূমিকা অস্বীকারের উপায় নেই, তবে তাদের দাবি করা আসনসংখ্যা বাস্তবসম্মত নয়। এছাড়া অনেক শরিক দলের প্রার্থী মাঠপর্যায়ে দুর্বল অবস্থানে আছেন। ফলে তাদের নিয়ে জয়ী হওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।

এর মধ্যে প্রতীক ব্যবহারের নিয়ম বদলও নতুন সংকট তৈরি করেছে। সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী এখন থেকে জোটের প্রার্থীদের নিজ দলের প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে। জোটের প্রধান দলের প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না। ফলে বিএনপি ৩০টির বেশি আসন ছাড় দেবে না বলেই মনে করছেন দলের নীতিনির্ধারকেরা।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা সাইফুল হক বলেন, “আমরা আগের তালিকা ছোট করছি। কয়েক দিনের মধ্যেই বিএনপির সঙ্গে এ বিষয়ে বসব।”

বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “নতুন প্রতীক ব্যবহারের নিয়মে ছোট দলগুলো বিপাকে পড়বে। অচেনা প্রতীক নিয়ে জয়ী হওয়া কঠিন হবে।”

জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতা ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, “গ্রামের মানুষ ছোট দলের প্রতীক চেনে না। এত অল্প সময়ে নতুন প্রতীককে পরিচিত করা কঠিন, যা আসন ভাগাভাগিতেও জটিলতা তৈরি করেছে।