শহীদের আত্মত্যাগ ও জাতির গৌরবগাথা বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু

জাতীয় ডেস্ক
জাতীয় ডেস্ক
১ ডিসেম্বর, ২০২৫ এ ৯:৪১ এএম
বিজয়ের মাস। ছবি: সংগৃহীত

বিজয়ের মাস। ছবি: সংগৃহীত

ডিসেম্বর মাস বাংলাদেশের ইতিহাসে গৌরব, অর্জন ও আত্মত্যাগের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। এই মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্বার প্রতিরোধের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটতে থাকে। একের পর এক বিভিন্ন রণাঙ্গনে উড়তে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতার মাস নানা অনুষ্ঠান ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে পালিত হবে।

বাঙালি জাতির হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটে এই ডিসেম্বর মাসেই। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের মাধ্যমে বাঙালি অর্জন করে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড, নিজস্ব জাতীয় পতাকা এবং আন্তর্জাতিক পরিচয়। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে সংগঠিত সংগ্রাম চূড়ান্ত রূপ পায় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর।

এই মাস কেবল গৌরবেরই নয়, বেদনাবিধূর শোকেরও। ডিসেম্বর মাসেই হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকার, আল-বদর বাহিনী দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। বিশ্ব ইতিহাসে জাতিকে মেধাশূন্য করতে এ ধরনের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত নেই।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা অভিযান এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সঙ্গে যৌথ আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হতে থাকে। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

বিজয়ের মাস উদযাপনে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আলোকসজ্জা ও তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে।

সকাল সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে জাতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবে শহীদদের প্রতি। দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ঐতিহাসিক কালুরঘাট থেকে মশাল রোড শো ও মহাসমাবেশের মাধ্যমে দিবসটি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।