অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে ‘যৌথ ঘোষণা’ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ


অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে যৌথ ঘোষণার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সভা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে দ্রুত বাড়তে থাকা অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) নিয়ন্ত্রণ ও অকালমৃত্যু কমাতে বহুখাতভিত্তিক উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় পর্যায়ের সভায় তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
সভায় তিনি বলেন, খেলাধুলার সুযোগ বাড়ানো, দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানে ব্যবস্থা নেওয়া এবং স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রাখা ক্লাব–জিমনেশিয়ামের জন্য কর মওকুফ বিবেচনা করা যেতে পারে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত এ সভায় কারিগরি সহায়তা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), এবং সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান।
ড. আব্দুর রশীদ বলেন, ৩৫টি মন্ত্রণালয় যৌথ ঘোষণার আওতায় একসঙ্গে কাজ করছে—এটি দেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় অগ্রগতি। মাঠের অভাব, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, তামাক ব্যবহার, বায়ুদূষণ ও সড়ক নিরাপত্তাহীনতা দূর না করতে পারলে এনসিডি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাই সমন্বিতভাবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে হবে।
সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, অতিরিক্ত সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ডব্লিউএইচওর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। আলোচনায় এনসিডি ঝুঁকি কমাতে আইন বাস্তবায়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্যবান্ধব অবকাঠামো, পরিবেশ সংরক্ষণ, তামাক নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে অগ্রাধিকার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে—সময়সীমাবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় বৃদ্ধি, সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ, আইন বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা, বিদেশে স্বাস্থ্য বিনিয়োগ আকর্ষণ, নতুন আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন এবং নগর পরিকল্পনায় জনস্বাস্থ্যবান্ধব অবকাঠামোর বাধ্যতামূলক অন্তর্ভুক্তি। তামাক, চিনিযুক্ত পানীয় ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের ওপর কর বৃদ্ধি করার সুপারিশও করা হয়।
সভার শেষাংশে বক্তারা বলেন, নীতি, আইন, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও ব্যাপক জনসচেতনতা ছাড়া অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। বহুমাত্রিক ও সমন্বিত উদ্যোগই এই সংকট মোকাবিলায় দীর্ঘস্থায়ী সমাধান আনতে পারে।









