দেশের স্থিতিশীলতার জন্য জাতীয় ঐক্য জরুরি


ছবি: সংগৃহীত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে ষড়যন্ত্রের নানা চিত্র ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হওয়ার ঘোষণার পরই অপশক্তিগুলো নির্বাচনের রূপরেখা ব্যাহত করতে সক্রিয় হয়েছে। সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী এবং পতিত আওয়ামী লীগের কিছু ক্যাডার নাশকতা সৃষ্টি ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। দেশের বিভিন্ন সেক্টরে ছদ্মবেশী দোসররা সক্রিয়ভাবে এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত আছে।
দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা ছাড়া বিকল্প নেই। বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা ও বিশ্লেষক যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলে জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর মাধ্যমে অপশক্তি কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই গণ-অভ্যুত্থানের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিল, এক বছর পর তা ফাটল ধরেছে। কিছু দল বিতর্কিত দাবি তুলছে, কেউ কেউ নির্বাচন স্থগিতের কথা বলছে, যা জনমনে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। কেউ আসন ভাগাভাগির জন্য পেছনে কৌশল করছে, কেউ বা নির্বাচনের বাইরে সুবিধা নিতে চাইছে। এর ফলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ উপকৃত হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারই দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারে। সুষ্ঠু ও নির্ভরযোগ্য নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো সমাধান নেই। তাই সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনমুখী হয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ ড. সাইফুল ইসলাম যোগ করেন, ‘যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য।’
নওগাঁ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘দেশকে গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষা করতে দলের ঐক্য অপরিহার্য।’ অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সতর্ক করেছেন, পতিত আওয়ামী লীগ দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যকে বজায় রাখতে সব দলের সচেতন থাকা জরুরি।
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে স্থিতিশীলতা ও জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা। যদি রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে না পারে, দেশের স্থিতিশীলতা বিপন্ন হবে।’ এভাবেই দেশ ও জাতির স্বার্থে নির্বাচনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সকল বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক নেতারা।