ড. নাজমুল মালদ্বীপে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
৯ আগস্ট, ২০২৫ এ ১০:২৪ এএম
ড. নাজমুল । ছবি : সংগৃহীত

ড. নাজমুল । ছবি : সংগৃহীত

তরুণ শিক্ষাবিদ ড. মো. নাজমুল ইসলামকে মালদ্বীপে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে এই দায়িত্ব পেয়ে তিনি দেশের ইতিহাসে প্রথম কূটনীতিক হিসেবে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি বাংলাদেশের কূটনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলমের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে গত ২৭ জুলাই ড. নাজমুল ইসলামকে মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাই কমিশনার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, অন্য যেকোনো পেশা বা ব্যবসা থেকে বিরত থেকে তিনি যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছরের জন্য এই দায়িত্ব পালন করবেন। পরবর্তীতে, ৩ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আবুল হাসান মৃধার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করে মালেতে হাই কমিশনার হিসেবে প্রেরণের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

নোয়াখালী জেলার সন্তান ড. নাজমুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তুরস্ক সরকারের বৃত্তি পেয়ে আঙ্কারা ইলদিরিম বেয়াজিট বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং সেখানে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।

তুরস্কে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি দেশটির পার্লামেন্টের ফরেন রিলেশন্স অ্যান্ড প্রটোকল ডিপার্টমেন্টে বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা শতবর্ষের ইতিহাসে প্রথম কোনো বিদেশির নিয়োগ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের ফরেন সার্ভিস ইনস্টিটিউটের সাউথ এশিয়া বিভাগের গেস্ট লেকচারার হিসেবে শিক্ষকতা করছেন।

তার আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে জাতিসংঘ, ওআইসি এবং ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সভা ও কার্যক্রমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা অন্যতম। রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন দেশের সংখ্যালঘু সমস্যা সমাধানে তিনি উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক ও একাডেমিক অবদান রেখেছেন।

তার এই নিয়োগকে বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের তরুণ কূটনীতিক প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন। তারা বিশ্বাস করেন, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, একাডেমিক যোগ্যতা এবং কূটনৈতিক দক্ষতার সমন্বয়ে ড. নাজমুল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।