গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ১,৩৯৪টি ভূমিকম্প


ভূমিকম্প : ছবি সংগৃহীত
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১,৩৯৪টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ‘ভলকানোডিসকভারিডটকম’। রোববার বিকেলে প্রকাশিত এক আপডেটে তারা জানায়, প্রতি মিনিটে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের ভূকম্পন তথ্য সংগ্রহ করে তাদের ডাটাবেইসে যুক্ত করা হয়।
ওয়েবসাইটটির তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে যে ভূমিকম্পগুলো রেকর্ড করা হয়েছে, তার মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬। এ সময়ের মধ্যে ৫ মাত্রার উপরে ৫টি ভূমিকম্প, ৪ থেকে ৫ মাত্রার ৫১টি, ১ থেকে ৪ মাত্রার ১০১টি এবং ২ থেকে ৩ মাত্রার ২৩৯টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়। এছাড়া রিখটার স্কেলে ২ এর নিচে ৯৯৮টি ক্ষুদ্র ভূকম্পনের ঘটনা ঘটে, যা সাধারণত মানুষের পক্ষে অনুভব করা সম্ভব নয়।
ভলকানোডিসকভারিডটকমের ২৫ বছরের তথ্য-উপাত্ত এবং ১৯০০ সাল থেকে সংগৃহীত ভূমিকম্পের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রতি বছর পৃথিবীতে গড়ে প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার ভূমিকম্প ঘটে থাকে। এর মধ্যে রিখটার স্কেলে ৮ বা তার বেশি মাত্রার বড় ধরনের ভূমিকম্প গড়ে পাঁচ বছর পর পর একবার ঘটে। এছাড়া প্রতি বছর ৭ মাত্রার চেয়ে বেশি ৬টিরও বেশি, ৬ মাত্রার চেয়ে বেশি প্রায় ১৪১টি, ৫ মাত্রার বেশি ১ হাজার ৯০০টি এবং ৪ মাত্রার বেশি প্রায় ২১ হাজার ভূমিকম্প হয়ে থাকে।
বাংলাদেশেও সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ১২ সেকেন্ডে প্রথম ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়, যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৩ এবং উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর পলাশ, ঢাকা থেকে ২৯ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে। একই দিন সন্ধ্যায় আরও দুটি ভূমিকম্প হয়—সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার এবং এক সেকেন্ড পর ৪ দশমিক ৩ মাত্রার। এর আগে শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে সমগ্র দেশ, যাতে শিশুসহ ১০ জন নিহত এবং ছয় শতাধিক আহত হন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প ঝুঁকির মানচিত্র অনুযায়ী বাংলাদেশকে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। জোন–১ উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা, জোন–২ মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এবং জোন–৩ তুলনামূলক নিম্ন ঝুঁকিপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। এসব অঞ্চলে ভূকম্পন প্রবণতা আগের তুলনায় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনা বড় ধরনের শক্তিশালী ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হতে পারে। তারা জনসাধারণকে সচেতন থাকার পাশাপাশি ভূমিকম্প সহনশীল স্থাপনা নির্মাণ, জরুরি প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা বিধান অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন।








