গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আক্রমণে আরও অন্তত ৯১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারানোদের মধ্যে নারী, শিশু এবং চিকিৎসক পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। এতে চলমান যুদ্ধে মোট নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, শনিবার দিনভর আকাশ ও স্থলপথে হামলা জোরদার করে ইসরায়েল। এতে বসতবাড়ি, স্কুলে আশ্রয়কেন্দ্র, ত্রাণশিবিরসহ একটি ট্রাক লক্ষ্যবস্তু হয়, যেখানে সাধারণ মানুষ শহর ছেড়ে পালাচ্ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার পর রাস্তায় রক্তাক্ত মৃতদেহ ছড়িয়ে পড়ে।

আলজাজিরা আরও জানায়, বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবু সালমিয়ার পরিবারের সদস্যরা। শনিবার ভোরে তার পারিবারিক বাড়িতে হামলায় তার ভাই, ভাবি ও তাদের সন্তানরা প্রাণ হারান। এ ঘটনায় ডা. আবু সালমিয়া বলেন, “হাসপাতালে কাজ করার সময় আমার ভাই ও ভাবির মরদেহ দেখে হতবাক হয়ে যাই। এখন প্রতিটি মুহূর্তই শঙ্কার।”

হামাস এই হামলাকে চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া একটি “রক্তাক্ত বার্তা” বলে অভিহিত করেছে। তারা দাবি করে, চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৭০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যা এবং ৪০০ জনকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এদিকে নাসর এলাকায় একটি ট্রাকে হামলায় আরও চারজন নিহত হন। ওই ট্রাকে আশ্রয় খুঁজতে পালাচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানান, ড্রোন, কামান ও বিস্ফোরক রোবট দিয়ে ইসরায়েল পুরো এলাকা ধ্বংস করছে। তিনি বলেন, “এটি যেন ভূমিকম্পের মতো। উদ্ধারকর্মীরা আহতদের কাছে পৌঁছাতেও পারছেন না।”

গাজা সিভিল ডিফেন্স জানায়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া হামলায় গাজা সিটি থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে চার লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। অথচ শহরটিতে একসময় প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করত।