ইসরায়েলের টানা বিমান হামলায় আবারও রক্তাক্ত হলো ফিলিস্তিনের গাজা সিটি। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৫১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে, যাদের মধ্যে রয়েছে ছয় বছর বয়সী জমজ শিশু ও তিনজন সাংবাদিক। তীব্র এই হামলায় লাখো মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যায় গাজা সিটির অন্যতম উচ্চ ভবন আল-ঘাফরি হাইরাইজ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল। শুধু এই ভবনই নয়, আশপাশের আবাসিক এলাকায়ও টানা বোমাবর্ষণে বহু ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। গাজার উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে ‘অস্বাভাবিক তীব্র হামলা’ চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি টিভি চ্যানেল ১২।

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত ৫০টি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। শুধু জায়তুন এলাকায় আগস্টের শুরু থেকে ধ্বংস হয়েছে ১ হাজার ৫০০’র বেশি ঘরবাড়ি। জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টার ফ্রান্সেসকা আলবানিজে অভিযোগ করেছেন, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উৎখাত করতে ইসরায়েল অপ্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন নাসর এলাকায় প্রতিবেদক মোহাম্মদ আল-কুইফি, ফটোগ্রাফার ও সম্প্রচার প্রকৌশলী আইমান হানিয়ে এবং সাংবাদিক ইমান আল-জামিলি। এ নিয়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮০ জনে, যা আন্তর্জাতিক মহলের মতে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী যুদ্ধ।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার ৯০৫ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৬ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অসংখ্য মরদেহ চাপা পড়ে আছে। যুদ্ধের ভয়াবহতায় গাজা প্রতিদিনই নতুন করে রক্তাক্ত হচ্ছে।