নেপালে এক সপ্তাহব্যাপী উত্তাল বিক্ষোভ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর অবশেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপগুলোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকের পর সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়।

রাজধানী কাঠমান্ডুতে সহিংসতায় ২০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার পর মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত আসে। নেপালের যোগাযোগ, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সরকার জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপস চালুর অনুমতি দিয়েছে। একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের শান্ত হয়ে ঘরে ফেরার আহ্বান জানান তিনি।

মন্ত্রী আরও জানান, সহিংস ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর নেপালের সুপ্রিম কোর্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে দেশটিতে নিবন্ধন করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি প্ল্যাটফর্ম নিবন্ধন না করায় সরকার গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

সরকারের এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। জেনারেশন জেড বা তরুণ প্রজন্ম সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরে রাজপথে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি ধীরে ধীরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগে বাধ্য হন।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী অলি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে কেবল নেপালের আইন মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এটি জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আপাতত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে।