নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী চেন নিং ইয়াং-এর জীবনাবসান

আন্তর্জাতিক ডেষ্ক
আন্তর্জাতিক ডেষ্ক
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ এ ৯:১০ এএম
মারা গেছেন নোবেলজয়ী চীনা পদার্থবিজ্ঞানী চেন নিং ইয়াং। ছবি: সংগৃহীত

মারা গেছেন নোবেলজয়ী চীনা পদার্থবিজ্ঞানী চেন নিং ইয়াং। ছবি: সংগৃহীত

না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিশ্ববিখ্যাত চীনা পদার্থবিজ্ঞানী ও নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক চেন নিং ইয়াং। মৃত্যুকালে এই মহান বিজ্ঞানীর বয়স হয়েছিল ১০৩ বছর। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি শনিবার এক প্রতিবেদনে তার মৃত্যুর এই দুঃখজনক খবর নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বেইজিংয়ের ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন।

চেন নিং ইয়াং বিজ্ঞান জগতে একটি অবিস্মরণীয় নাম। তিনি সহকর্মী লি সাং-দাও ১৯৫৭ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। তাদের এই যৌথ গবেষণা প্রাইটি ল বা সমতার নিয়ম নিয়ে ছিল, যা পরবর্তীতে মৌলিক কণার গঠন ও আচরণ সম্পর্কে আমাদের বুঝতে সহায়তা করে এবং পদার্থবিজ্ঞানের জগতে এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের পথ প্রশস্ত করে।

১৯২২ সালে চীনের পূর্বাঞ্চলীয় আনহুই প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন চেন নিং ইয়াং। তিনি ছিলেন পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। তার বাবা নিজেও ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক ছিলেন, যার ফলে ছোটবেলা থেকেই তিনি একademic পরিবেশে বড় হয়ে ওঠেন। ১৯৪২ সালে তিনি ন্যাশনাল সাউথওয়েস্ট অ্যাসোসিয়েটেড ইউনিভার্সিটি কুনমিং থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

কৈশোরেই যিনি নোবেল পুরস্কার জয়ের স্বপ্ন দেখতেন, মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই তিনি সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হন। নোবেল কমিটি তাদের এই যুগান্তকারী কাজকে অত্যন্ত অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন অনুসন্ধান ও মৌলিক কণা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হিসেবে আখ্যা দেয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি ছিংহুয়ার বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। সেখানে তিনি বিখ্যাত ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী এনরিকো ফেরমির তত্ত্বাবধানে গবেষণা কাজ চালান। তার দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের প্রায় সকল শাখাতেই কাজ করেছেন, তবে তার প্রধান আগ্রহ ছিল স্ট্যাটিস্টিক্যাল মেকানিকস ও সিমেট্রি প্রিন্সিপলস বিষয়ে।

নোবেল পুরস্কার জয়ের পর তিনি ১৯৫৭ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন স্মারক পুরস্কার এবং ১৯৫৮ সালে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। চেন নিং ইয়াং-এর মৃত্যু বিশ্ব বিজ্ঞান অঙ্গনে এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। তার গবেষণা ও অবদান আগামী প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের জন্য পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করবে।