সানস্ক্রিন রোদ থেকে ত্বককে যেভাবে সুরক্ষা দেয়


ছবি : সংগৃহীত
গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা শরৎ—বাংলাদেশের আবহাওয়ায় সূর্যের তীব্রতা প্রায় সারা বছরই সমান থাকে। পরিমাণমতো রোদ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও দীর্ঘসময় ত্বকে সরাসরি রোদ পড়লে অতিবেগুনি রশ্মি নানা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে ত্বক লালচে হয়ে যাওয়া, ঘামাচি, চুলকানি, সানবার্নসহ জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এসব সমস্যা প্রতিরোধে সানস্ক্রিন হতে পারে একটি কার্যকর সমাধান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত ইউভি-এ এবং ইউভি-বি—এই দুই ধরনের অতিবেগুনি রশ্মি মানুষের ত্বকের ক্ষতি করে। ইউভি-এ রশ্মি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ডিএনএ ক্ষতি, অকাল বার্ধক্য ও বলিরেখার সৃষ্টি করে। অন্যদিকে ইউভি-বি ত্বকের উপরের স্তর আঘাত করে সানবার্ন এমনকি ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। সানস্ক্রিন ত্বকের উপরিভাগে সুরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে এসব ক্ষতিকর রশ্মিকে প্রতিরোধ করে।
বর্তমানে বাজারে দুটি ধরণের সানস্ক্রিন পাওয়া যায়—ফিজিক্যাল ও কেমিক্যাল। ফিজিক্যাল সানস্ক্রিনে জিংক অক্সাইড বা টাইটেনিয়াম অক্সাইড থাকে যা সূর্যের রশ্মিকে প্রতিফলিত করে। অন্যদিকে কেমিক্যাল সানস্ক্রিনে থাকা উপাদানগুলো ক্ষতিকর রশ্মিকে তাপে রূপান্তরিত করে ত্বকের বাইরে রাখে। বাংলাদেশে বছরের অধিকাংশ সময় সূর্যের আলোতে ইউভি রশ্মির মাত্রা বেশি থাকায় নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহারের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।
এখানে মানুষের জীবনযাত্রা ও আবহাওয়াজনিত কারণে সূর্যের সংস্পর্শে থাকার সময় তুলনামূলক বেশি। এর ফলে পানিশূন্যতা, ছত্রাক সংক্রমণ, অতিরিক্ত ঘাম, ত্বকের কালো দাগ ও মেলাসমার মতো সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া প্রাকৃতিকভাবে বাংলাদেশিদের ত্বকে মেলানিনের মাত্রা বেশি হলেও অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে অতিরিক্ত মেলানিন তৈরি হয়ে দাগ ও অসম ত্বকের রংয়ের সমস্যা তৈরি করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত সুরক্ষা ছাড়া যারা দীর্ঘসময় রোদে থাকেন তাদের ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে বেশি। এজন্য প্রতিদিনের বাইরে বের হওয়ার আগে এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর সানস্ক্রিন ব্যবহার অপরিহার্য। সঠিক মাত্রায় ও উপযুক্ত এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে শতকরা ৯৭ থেকে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতিকর রশ্মি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র সৌন্দর্য রক্ষার জন্য নয়, বরং ত্বকের দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতা বজায় রাখতে সানস্ক্রিনকে প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করা প্রয়োজন। নিয়মিত মানসম্মত সানস্ক্রিন ব্যবহারে ত্বক পেতে পারে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা।










