এনসিটিবি ও শিক্ষা বোর্ডে বদলি আতঙ্ক - কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব চরমে


ছবি : আজকের প্রথা গ্রাফিক্স
শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জুবায়েরের আকস্মিক অপসারণের পর শিক্ষা প্রশাসনে তীব্র অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে একজন পরিচালককে ঘিরে চলমান বিরোধ প্রশাসনিক কার্যক্রমকে প্রভাবিত করছে। জুলাইবিরোধী স্লোগান দেওয়া কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় শিক্ষাপ্রশাসনের প্রভাবশালী অংশগুলো তার বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডে, যেখানে কর্মকর্তারা বদলি আতঙ্কে কাজ করছেন।
অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, বর্তমানে শিক্ষা প্রশাসনে পাঁচটি প্রধান গোষ্ঠী সক্রিয়। দুটি গোষ্ঠী বিএনপিপন্থি, একটি জামায়াতপন্থি, একটি পতিত আওয়ামী লীগপন্থি এবং একটি এনসিপিপন্থি। শিক্ষা সচিবের অপসারণের পর গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়েছে। মাউশির সমন্বয় সভায় তিনজন পরিচালক ও কয়েকজন উপপরিচালক পরিচালকের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন, যা দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আনে।
মনিটরিং অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশন উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক কাজী আবু কাইয়ুম শিশির অভিযোগ ও দুর্নীতির বিষয়গুলো তদন্তের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনি শিক্ষার প্রকল্পগুলোর ব্যাংক হিসাব তলব করেছেন এবং অবৈধ কর্মকাণ্ড চিহ্নিত করেছেন। এই উদ্যোগের কারণে বিএনপিপন্থি, জামায়াতপন্থি ও কিছু আওয়ামী লীগপন্থি কর্মকর্তা একত্রিত হয়ে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা করছেন।
শিশিরের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে মাউশির সাতজন পরিচালক ও বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালক একত্রিত হয়েছেন। একই সময়ে কর্মচারী নেতা অহিদুর রহমান অহিদের বিরুদ্ধে বদলি বাণিজ্য, এমপিওর মাসোয়ারা এবং ঘুষ-সংক্রান্ত অভিযোগ ওঠেছে। শিক্ষা খাতের একক কর্তৃত্ব স্থাপনের জন্য তারা বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও প্রকল্পে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে, এখনো ১৮ জুলাইবিরোধী কর্মকর্তা বহাল রয়েছেন। মাউশি ও অন্যান্য শিক্ষা প্রকল্পে তাদের উপস্থিতি রয়েছে, যদিও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার সুপারিশ করা হচ্ছে। এনসিটিবি ও শিক্ষা বোর্ডগুলোতেও বদলি আতঙ্ক বিরাজ করছে, যেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও বদলি প্রক্রিয়া তৎপর।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বদলির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আগামী সপ্তাহে প্রায় ১০–১২ জন কর্মকর্তার বদলি হতে পারে। তবে প্রশাসনে কার্যক্রম ও শৃঙ্খলার দিক থেকে শিশু, দুর্নীতি, এবং অবৈধ কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।