পেঁয়াজের বাজারে ফের অস্থিরতা - বেড়েছে সিন্ডিকেটের দাপট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ আগস্ট, ২০২৫ এ ৪:২৫ এএম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পেঁয়াজের মৌসুম শেষ হয়ে আসা, আমদানি বন্ধ এবং টানা বৃষ্টির অজুহাতে বাজারে ফের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩১ জুলাই খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৫৫ টাকা। ১ আগস্ট দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬০ টাকায়। এরপর দ্রুত ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ৮ আগস্ট ৮৫ টাকা এবং রবিবার তা ৯০ টাকায় পৌঁছায়।

রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, মালিবাগ ও রামপুরাসহ বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে দাম বৃদ্ধি পাওয়ার অজুহাতে খুচরা বিক্রেতারা ক্রেতাদের ওপর বাড়তি চাপ দিচ্ছেন। যদিও আড়তে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন অভিযোগ করেন, প্রতিবছর একইভাবে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পেঁয়াজের বাজারে মূল্য কারসাজি করে আসছেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো স্থায়ী সমাধান বা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এখনো কার্যকর হয়নি। ফলে বাজারে ভোক্তাদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।

কাওরান বাজারের পাইকারি আড়তে রবিবার দেশি পেঁয়াজের প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হয়েছে ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগেও ছিল ২৫০ টাকা। অর্থাৎ পাইকারি দামে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১৮ থেকে ২২ টাকা। খুচরা বাজারে এদিন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকায়, যেখানে এক সপ্তাহ আগে দাম ছিল ৬০ টাকা।

চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারেও একই চিত্র। সেখানে ভালোমানের দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা বেড়ে ৭০-৭৫ টাকায় পৌঁছেছে। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯০ টাকায়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণ ও আমদানি বন্ধ থাকায় মোকামে পর্যাপ্ত সরবরাহ হচ্ছে না। পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং চাহিদা বেশি থাকায় দাম ঊর্ধ্বমুখী।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কৃষক, পাইকারি ও খুচরা—এই তিন স্তরে বাজার তদারকি চালানো হচ্ছে। ক্রয়-বিক্রয়ের ক্যাশ মেমো সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং মূল্য বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ যাচাই শেষে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেঁয়াজ আমদানি সচলের সুপারিশ জানানো হবে।