৩ আগস্ট ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩ আগস্ট, ২০২৫ এ ৬:৩২ এএম
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার কার্যক্রম শুরু।  ছবি  সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার কার্যক্রম শুরু। ছবি সংগৃহীত

রোববার, ২০২৫ সালের ৩ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল‑১‑এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা-এর সূচনা বক্তব্য এবং প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা ৩০ মিনিটে বিচার কার্যক্রম শুরু করা হয় এবং এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অনুমোদন সাপেক্ষে বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে 

বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিন সদস্যের এই ট্রাইব্যুনাল, যেখানে অপর দুই আসামি হিসেবে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল‑মামুন, যিনি ইতিমধ্যেই দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন 

পূর্বে ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করেন—চলতি বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ মঞ্জুর করা হয় । প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম এবং মুখ্য প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলা পরিচালনা করছেন।

মামলায় প্রথম অভিযোগে অভিযোগ করা হয়—২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সেনসিটিভ বক্তব্য প্রদান, যার প্ররোচনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লক্ষ লক্ষ নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়, যেখানে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত ও ২৫,০০০ আহত হন। অন্যান্য চার অভিযোগে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহারের নির্দেশ, রংপুর ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় হত্যাকাণ্ড এবং নিরীহতা ভঙ্গ করে অভিযান চালানোর জোরালো অভিযোগ ।

এ দুর্ঘটনার পর ৫ আগস্ট ২০২৪ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। ২ জুলাই ২০২৫ আদালত অবমাননার জন্য হাসিনাকে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল—এটাই তাঁর বিরুদ্ধে আপাতত প্রথম মেয়াদি সাজা ।

এছাড়া ২২ জুলাই ও ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ তার পরিবারের সম্পদ ও ব্যাংক একাউন্ট জব্দসহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয় ।

মামলার সূচনাপর্বে প্রথম সাক্ষী “খোকন চন্দ্র বর্মণ”, যার সাক্ষ্য আজ প্রথম শুনানির অংশ হিসেবে নেয়া হবে। মোট ৮১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন অস্থায়ী সরকারের দুই সদস্য এবং একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক ।

 ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, সিরিয়াস ইউজারদের নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু মূহুর্ত সরাসরি সম্প্রচার বাদে রাখা হতে পারে ।

এই মামলা এবং বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র মনোযোগ কেড়েছে, বিশেষ করে আল জাজিরা–দ্য গার্ডিয়ান, এপি ও রয়টার্সের প্রতিবেদনগুলোতে বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছ।