জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হলে রাজনৈতিক নৈরাজ্যের শঙ্কা: সাইফুল হক


রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীরা । ছবি : সংগৃহীত
সরকারের অকার্যকারিতায় সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যের পথে বাঁক নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, দেশের বহুমাত্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকিও তত বাড়বে।
বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সাইফুল হক বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে, মব সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারের অকার্যকারিতা এবং নির্বাচন-সংস্কারকে ঝুলিয়ে রাখার অপচেষ্টার ফলে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও হুমকির মুখে পড়ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, পরিকল্পিতভাবে কি এসব বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে?
তিনি জানান, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে বোঝাপড়ার আভাসে সাময়িক স্বস্তি মিলেছিল। তবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পরও সুনির্দিষ্ট তফসিল না দেওয়ায় জনমনে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের কমপক্ষে ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করার কথা থাকলেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনো স্পষ্ট কোনো বার্তা আসেনি।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবও অবান্তর। গত ১৬ বছরে কেউ এ দাবিতে আন্দোলনে যায়নি; অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বের মধ্যেও তা পড়ে না।
সাংবিধানিক সংস্কার প্রসঙ্গে সাইফুল হক বলেন, নির্বাচনের আগে বিচার ও সংস্কারের পদক্ষেপকে জনগণ দৃশ্যমান দেখতে চায়। সাংবিধানিক সংস্কার ছাড়া অন্যান্য সংস্কারগুলো নির্বাহী আদেশেই সম্পন্ন করা সম্ভব। তবে সংবিধানে যুক্ত করার জন্য নির্বাচিত সংসদ প্রয়োজন, যেখানে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জাতীয় সনদ’ গ্রহণ করা যেতে পারে। জুলাই মাসের মধ্যেই এই সনদ স্বাক্ষর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ২১ দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, শ্রমিক সমাবেশ, আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং স্মরণিকা প্রকাশ। একইসঙ্গে শহীদ পরিবার ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, সাইফুল ইসলাম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক বাবর চৌধুরী ও জামিরুল রহমান ডালিম।
আজকের প্রথা/এআর