মিরাজের আধিপত্যে ধূসর মোসাদ্দেকের ভবিষ্যৎ কি


শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হেরেছে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। তবে এই সিরিজের চেয়েও আলোচনায় ছিল সিরিজ শুরুর আগের এক মন্তব্য—যা ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক ও সমালোচনার ঝড়।
ওয়ানডে সিরিজের দল ঘোষণার সময় সংবাদ সম্মেলনে মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর একটি বক্তব্য ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "যত দিন মেহেদী হাসান মিরাজ দলে আছেন, তত দিন মোসাদ্দেকের কোনো সুযোগ নেই।"
এই মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ওঠে সমালোচনার ঝড়।
অবশেষে বুধবার শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে ওই মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন গাজী আশরাফ।
তিনি বলেন,
"আপনারা অনেকে ইউটিউবে কাজ করেন, ভিডিও এডিট করেন। আমিও কলাম লিখতাম, শব্দচয়নে কাটাকাটি না করলে ঠিক হতো না। ওই দিন প্রোগ্রামটি লাইভ ছিল। ২০-২৫ মিনিটে অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অনেক কথাই বলে ফেলেছিলাম।"
প্রধান নির্বাচক স্বীকার করেন, ওই মন্তব্যটি সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি।
তিনি বলেন,
"আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম, যতক্ষণ মিরাজ আছে, ততক্ষণ মোসাদ্দেকের সুযোগ অনেক কম। কিন্তু বলেছিলাম 'কোনো সুযোগ নেই'—এই তিনটি শব্দেই আমার ভুল হয়েছিল।"
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান,
"আমি নিজেও বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি ঠিকভাবে বলিনি। দুই দিন পর মোসাদ্দেকের সঙ্গে দেখা হলে আমি তাকে সরি বলেছি এবং বলেছি, আমি এভাবে বোঝাতে চাইনি।"
ক্রিকেটীয় দিক থেকে সিরিজ হারের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন গাজী আশরাফ।
তিনি বলেন,
"শ্রীলঙ্কার পেসাররা যেভাবে খেলেছে, আমাদের পেসাররা তা পারেনি। তারা মাঝেমধ্যে ব্রেক থ্রু পেয়েছে, কিন্তু আমরা তা পারিনি। শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররাও ম্যাচকে অনেক গভীরে নিয়ে যেতে পেরেছে, সেখানে আমরা পিছিয়ে পড়েছি।"
জাতীয় দলের প্রথম ওয়ানডে অধিনায়ক গাজী আশরাফ আরও বলেন,
"আমাদের ব্যাটাররা ভালো করতে পারেনি। শ্রীলঙ্কার দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কা সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের দলে সেই অভাবটা ছিল। অভিজ্ঞরা চলে যাওয়ার পর একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে, যেটা পূরণে সময় লাগবে।"
বিসিবির এই পরিচালক খেলোয়াড় সংকটের কথাও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন,
"আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো খেলোয়াড়ের সংকট এখনো রয়েছে। ৩০ জন খেলোয়াড়কে ঘিরেই ঘুরপাক খাচ্ছে দল নির্বাচন। তবে আশা করি, ‘এ’ দল, এইচপি এবং বয়সভিত্তিক দল থেকে ভালো খেলোয়াড় উঠে আসবে।"