বিপদে বাংলাদেশও

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ভয়ংকর গ্রহাণু -২০২৪ ওয়াইআর৪

আজকের প্রথা প্রতিবেদন
আজকের প্রথা প্রতিবেদন
২৭ অক্টোবর, ২০২৫ এ ৫:০৩ এএম
মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে গ্রহাণু ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’, বিজ্ঞানীরা সতর্ক । ছবি: Ai সংগৃহীত

মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে গ্রহাণু ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’, বিজ্ঞানীরা সতর্ক । ছবি: Ai সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে একটি গ্রহাণু। ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’ নামে এই গ্রহাণু ২০৩২ সালে সৌরজগতের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে। যদিও এর আঘাত হানার সম্ভাবনা খুব কম, বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ২.১ শতাংশ ঝুঁকি রয়েছে। অর্থাৎ ৯৭.৯ শতাংশ সম্ভাবনা আছে যে এটি নিরাপদে পাশ কাটিয়ে যাবে। তবে এই ২ শতাংশ সম্ভাবনাই অনেককে আতঙ্কিত করছে। বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, যদি গ্রহাণুটি আঘাত হানে, তা হতে পারে ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর।

বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুর গতিপথ, গতি ও আকার বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য আঘাতের স্থান নির্ধারণ করেছেন। নাসার ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভে প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার ডেভিড র‌্যাঙ্কিন জানিয়েছেন, “যদি ২ শতাংশ সম্ভাবনা সত্যি হয়, তাহলে আঘাত পড়তে পারে দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাংশ, প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণ এশিয়া, আরব সাগর বা আফ্রিকার কিছু অংশে।” ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, সুদান, নাইজেরিয়া, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া ও ইকুয়েডর।

‘২০২৪ ওয়াইআর৪’ প্রথম আবিষ্কার করা হয় ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোনমি থেকে। এর ব্যাস ১৩০ থেকে ৩০০ ফুটের মধ্যে। বর্তমানে এটি টরিনো স্কেলে ৩ নম্বর হুমকি স্তরে অবস্থান করছে, যা ২০০৪ সালের ‘অ্যাপোফিস’-এর পর সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে ধরা হচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গ্রহাণুটি যদি আঘাত হানে, বিস্ফোরণের শক্তি হবে প্রায় ৮ মিলিয়ন টন টিএনটির সমান, যা হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি শক্তিশালী। বিস্ফোরণের প্রভাব ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা আশ্বস্ত করছেন, যথাসময়ে সতর্কতা নিলে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব।

অ্যারিজোনার লওয়েল অবজারভেটরির গ্রহাণু বিশেষজ্ঞ টেডি কারেটা বলেন, “গ্রহাণুর আঘাতের সম্ভাবনা খুবই কম। যদি কখনো সেই আশঙ্কা দেখা দেয়, আমরা আগেই মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে পারব।”

জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই ‘প্ল্যানেটারি ডিফেন্স প্রটোকল’ সক্রিয় করেছে। বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুর গতিপথ নজরে রাখছেন এবং প্রয়োজনে ‘কাইনেটিক ইমপ্যাক্ট’ পদ্ধতিতে এর পথ পরিবর্তনের পরিকল্পনা করেছেন। নাসা ২০২৩ সালে এই প্রযুক্তির সফল পরীক্ষা চালিয়েছে, যা ভবিষ্যতে গ্রহাণু প্রতিরোধে কার্যকর হবে।