অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের শ্বশুর লুৎফর রহমান। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আরও ২৪ জনের সঙ্গে তিনি শপথ নেন।

সারজিসের শ্বশুর বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনার ঝড়। এ প্রসঙ্গে আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিলে তার নিচে মন্তব্য করেন সারজিস আলম। সেখানে তিনি শ্বশুরের যোগ্যতা ও পেশাগত অভিজ্ঞতার বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।

সারজিস জানান, তার শ্বশুর ১৯৯১-৯২ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলসহ অর্জিত নম্বরের ভিত্তিতে তিনি ভর্তি পরীক্ষার খ ইউনিটে ১৯তম স্থান অর্জন করেছিলেন। এরপর আইন বিভাগ থেকে এলএলবি (LLB) ও এলএলএম (LLM) ডিগ্রি সম্পন্ন করে ১৯৯৮ সালে বার কাউন্সিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।

২০০৬ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন। বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগ উভয় জায়গায় আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পারিবারিক সম্পর্কের পূর্ব থেকেই তিনি বাংলাদেশের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সারজিস দাবি করেন, তার শ্বশুরের শতাধিক জুনিয়র বর্তমানে সুপ্রিম কোর্ট ও নিম্ন আদালতে সফলভাবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন।

নবগঠিত ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’-এর মাধ্যমে সকল যোগ্যতা পূরণ ও প্রয়োজনীয় বাছাই প্রক্রিয়া অতিক্রম করেই লুৎফর রহমান অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন সারজিস। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে লেখেন, তার শ্বশুরের দীর্ঘদিনের যোগ্যতা ও পরিশ্রমকে উপেক্ষা করে বিষয়টিকে ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচায়ক।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি সরকার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ২৫ জনকে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তাদের মধ্যে ৯ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, ৯ জন আইনজীবী এবং ৭ জন আইন কর্মকর্তা রয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম অ্যাডভোকেট মো. লুৎফর রহমান, যিনি এনসিপি নেতা সারজিস আলমের শ্বশুর। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।