শমশের আলীর মৃত্যুতে শোক, শ্রদ্ধার ঢল বাংলাদেশের বিজ্ঞানী মহলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩ আগস্ট, ২০২৫ এ ৫:৫০ এএম
পরমাণু বিজ্ঞানী শমশের আলী আর নেই। ছবি : সংগৃহীত

পরমাণু বিজ্ঞানী শমশের আলী আর নেই। ছবি : সংগৃহীত

পরমাণু বিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. এম শমশের আলী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

শনিবার, ২ আগস্ট রাত সাড়ে ৩টার দিকে, ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

শমশের আলীর বড় ছেলে জেহান আলী গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাদ জোহর ধানমণ্ডির ৭ নম্বর রোডের বায়তুল আমান মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (বিআইআইটি) শমশের আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। সংস্থার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তার অমূল্য অবদান জাতি দীর্ঘদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

শমশের আলী ১৯৩৭ সালের ২১ নভেম্বর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন এবং ১৯৫৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। সেই বছরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।

১৯৫৯ সালে শ্রেষ্ঠত্বের সঙ্গে অনার্স এবং ১৯৬০ সালে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬১ সালে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯৬৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থিওরেটিক্যাল নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে দ্বিতীয় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৬১ সালে পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৬৫ সালে দেশে ফিরে ঢাকার আণবিক শক্তি কেন্দ্রে সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে কাজ শুরু করেন। কর্মদক্ষতার কারণে তিনি ১৯৭০ সালে আণবিক শক্তি কমিশনের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন, যা তিনি ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বহন করেন।

১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে স্পেশাল সাইটেশনের মাধ্যমে অনারারি প্রফেসর অব ফিজিক্স করার বিরল সম্মান প্রদান করে। ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত কাজ করেন।

১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য এবং ২০০২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতি ছিলেন।

শমশের আলীর জীবনের কাজ ও অবদান বাংলাদেশের বিজ্ঞান গবেষণায় একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে।